পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

859 রবীন্দ্র-রচনাবলী আমার বক্তব্য এই ষে, সকল বিভাগই যদি এক প্রাণক্রিয়ার অন্তর্গত না হয় তবে এ ভার বহন করা কঠিন। আমি যতদিন আছি ততদিন হয়তো এ বিচ্ছেদ ঠেকাতে পারি, কিন্তু আমার অবর্তমানে কার আদর্শে চলবে ? আমি এই বিদ্যালয়ের জন্ত অনেক দুঃখ স্বীকার করে নিয়েছি— আশা করি আমার এই উদ্ধৃবেগ প্রকাশ করবার অধিকার আছে। এমন প্রতিষ্ঠান নেই যার মধ্যে কিছু নিন্দনীয় নেই, কিন্তু দরদী তা বুক দিয়ে চাপা দেয় ; এমন অনুষ্ঠান নেই যার দুঃখ নেই, বন্ধু তা আনন্দের সঙ্গে বহন করে। দৃঢ় নিষ্ঠার সঙ্গে সকলে একত্র হয়ে যেন আমরা আদর্শের বিশুদ্ধি রক্ষা করি, বিদ্যালয়ের মূল উদ্বেগু বিশ্বত না হই । ক্রমে বিদ্যালয়ের মধ্যে আর-একটা আইডিয়া প্রবেশ করেছিল— সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশ্বের সঙ্গে ভারতবর্ষের যোগ । এতে নানা লাভক্ষতি হয়েছে, কিন্তু পেয়েছি আমি কয়েকজন বন্ধু যারা এখানে ত্যাগের অর্ঘ্য এনেছেন, আমার কর্মকে, আমাকে ভালোবেসেছেন। নানা নিন্দা তারা শুনেছেন। বাইরে আমরা অতি দরিদ্র, কী দেখাতে পারি— তবুও বন্ধুরূপে সাহায্য করেছেন । শ্ৰীনিকেতনকে যিনি রক্ষা করছেন তিনি একজন বিদেশী — কী না তিনি দিয়েছেন। এওজ জরিত্র তৰু তিনি যা পেরেছেন দিয়েছেন— আমরা তাকে কত আঘাত দিয়েছি, কিন্তু কখনো তাতে ক্ষুঞ্জ হয়ে তিনি আমাদের ক্ষতি করেন নি। লেস্নি-সাহেব আমাদের পরম বন্ধু, পরম হিতৈষী। কেউ কেউ আজ পরলোকে। এই অকৃত্রিম সৌহার্দ্য সকল ক্ষতির ছুখে সান্থনা। একান্তমনে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি এই বিদেশী বন্ধুদের কাছে । v cशौष २७१२ ভাঞ্জ ১৩৪৯ শাস্তিনিকেতন ybr যুরোপে সর্বত্রই আছে বিজ্ঞানসাধনার প্রতিষ্ঠান— ব্যাপক তার আয়োজন, বিচিত্র তার প্রয়াস। আধুনিক যুরোপের শক্তিকেন্দ্র বিজ্ঞানে, এইজন্যে তার অনুশীলনের উদ্যোগ সহজেই সর্বজনের সমর্থন পেয়েছে। কিন্তু যুরোপীয় সংস্কৃতি কেবলমাত্র বিজ্ঞান নিয়ে নয়- সাহিত্য আছে, সংগীত আছে, নানাবিধ কলাবিষ্ঠা আছে, জনহিতকর প্রচেষ্টা আছে। এদের কেন্দ্র নানা জায়গাতেই রূপ নিয়েছে জাতির স্বাভাবিক প্রবর্তনায় ।