পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমবায়নীতি • " ფტ% () ডেনমার্কের একটি মস্ত স্বৱিধা এই যে, সে দেশ রণসজ্জার বিপুল ভারে:পীড়িত নয়। তার সমস্ত অর্থই প্রজার বিচিত্র কল্যাণের জন্তে যথেষ্ট পরিমাণে নিযুক্ত হতে পারে। প্রজার শিক্ষা স্বাস্থ্য ও অন্তান্ত সম্পদের জন্তও আমাদের রাজস্বের ভারমোচন আমাদের ইচ্ছাধীন নয়। প্রজাহিতের জন্ত রাজস্বের ষে উদ্ধৃবৃত্ত থাকে তা শিক্ষাবিধান প্রভৃতি কাজের জন্ত যৎসামান্ত । এখানেও আমাদের সমস্ত হচ্ছে রাজশক্তির সঙ্গে প্রজাশক্তির নিরতিশয় অসাম্য। প্রজার শিক্ষা স্বাস্থ্য প্রভৃতি কল্যাণের জন্তে সমবায়প্রণালীর দ্বারাই, নিজের শক্তি-উপলব্ধি-দ্বারাই অসাম্যজনিত দৈন্তদুৰ্গতির উপর ভিতর থেকে জয়ী হতে হবে। এই কথাটি আমি বহুকাল থেকে বারবার বলেছি, আজও বার বার বলতে হবে । আমাদের দেশে একদিন ছিল ধনীর ধনের উপর সমাজের দাবি । ধনী তার ধনের দায়িত্ব লোকমভের প্রভাবে স্বীকার করতে বাধ্য হত । তাতে তখনকার দিনে কাজ চলেছে, সমাজ বেঁচেছে । কিন্তু সেই দামদাক্ষিণ্যের প্রথা থাকাতে সাধারণ লোকে আত্মবশ হতে শিখতে পারে নি। তারা অনুভব করে নি যে, গ্রামের অন্ন ও জল, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, ধর্ম ও আনন্দ তাদের প্রত্যেকের শুভ-ইচ্ছার সমবায়ের উপরেই নির্ভর করে। সেই কারণেই আজ যখন আমাদের সমাজনীতির পরিবর্তন হয়েছে, ধনের ভোগ ৰখন একান্ত ব্যক্তিগত হল, ধনের দায়িত্ব যখন লোকহিতে সহজভাবে নিযুক্ত নয়, তখন লোক আপন হিতসাধন করতে সম্পূর্ণ অক্ষম হয়েছে । আজ ধনীরা শহরে এসে ধনভোগ করছে বলেই গ্রামের সাধারণ লোকেরা আপন ভাগ্যের কাপণ্য নিয়ে হাহাকার করছে। তাদের বঁাচবার উপায় যে তাদেরই নিজের হাতে এ কথা বিশ্বাস করবার শক্তি তাদের নেই। গোড়ায় অল্পের ক্ষেত্রে এই বিশ্বাস যদি জাগিয়ে তুলতে পারা যায়, এই বিশ্বাসকে সার্থকভাবে প্রমাণ করা যায়, তা হলেই দেশ ক্রমে সকল দিকেই বাঁচবে। অতএব সমবায়রীতির দ্বারা এই সত্যকে সাধারণের মধ্যে প্রচার করা আমাদের আজকের দিনের কর্তব্য। লঙ্কার বহুখাষ্ঠখাদক দশমুণ্ডধারী বহু-অৰ্ধ-গৃধ্র, দশ-হাতওয়াল রাবণকে মেরেছিল ক্ষুত্র ক্ষুত্র বানরের সংঘবদ্ধ শক্তি । একটি প্রেমের আকর্ষণে সেই সংঘটি বেঁধেছিল । আমরা যাকে রামচন্দ্র বলি তিনিই প্রেমের দ্বারা দুর্বলকে এক করে তাদের ভিতর প্রচণ্ড শক্তিবিকাশ করেছিলেন। আজ আমাদের উদ্ধারের জন্তে সেই প্রেমকে চাই, সেই মিলনকে চাই । २ खूलांहे >>२१ শ্রাবণ ১৩৩৪