পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পল্লীপ্রকৃতি (tSఏ মাহুষের চিত্ত যেখানে সবল থাকে সেখানে সে আপনার নিহিতার্থকে আপন শক্তির ৰোগে উজবোধিত করে। তার থেকে সে যা-কিছু ফল পায়, সে ফল তত মূল্যবান নয় যেমন মূল্যবান তার এই সচেষ্ট আত্মশক্তির উপলদ্ধি। এতেই তার সকলের চেয়ে বড়ো আনন্দ, কেননা মাকুবের সকলের চেয়ে বড়ো পরিচয় হচ্ছে, সে স্বষ্টিকর্তা । আমাদের এই আপন স্বষ্টিশক্তির মধ্যে আমরা বিশ্বস্রষ্টার স্পর্শ পাই। তার সঙ্গে সহযোগিতাতেই আমাদের গৌরব, আমাদের কল্যাণ। যেখানে সেই সহযোগিতার বিচ্ছেদ, সেইখানেই আমাদের যত-কিছু দুৰ্গতি। যেখানে বিশ্বস্বটিতে আমাদের কাজের বিধান নেই, কেবল ভোগের বরাদ্ধ, সেইখানে তো আমরা পশু । মাছুয আপন ভাগ্যকে আপনি গড়ে তোলে, সেই তার আপন জগৎ । আত্মকর্তৃত্বের, আত্মস্থষ্টির সেই জগং যদি হারিয়ে থাকি, তবে সবই হারিয়েছি। মানুষের মধ্যে যিনি ঈশ্বর আছেন তার উদবোধন করতে হবে । আমরা এই গ্রামের দ্বারে এসে সেই দেবতাকে ডাকছি, অস্তরের মধ্যে রুদ্ধদ্বার হয়ে রয়েছেন বলে ধার পূজা হচ্ছে না। মানুষ জড়ের মতন হয়ে রয়েছে, শুষ্ক কাষ্ঠের মতন, যার ফল নেই, ফুল নেই। মন্থন্তত্বের এত বড়ে অবমাননা তো আর হতে পারে না । প্রশ্নকারী বলতে পারেন, তেত্রিশ কোটির তোমরা কী করতে পার। কিন্তু বিধাতা তো তেত্ৰিশ কোটির ভার আমাদের হাতে দেন নি ? তিনি শুধু একটি প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কী করছ। যে কার্যক্ষেত্র তোমার, সেখানে তুমি নিজেকে সত্য করেছ কি না। তেত্রিশ কোটির কী করতে পারি, এ প্রশ্ন ধারা করেন তারা সত্যকাজের পথকে রুদ্ধ করেন। দুঃসাধ্যসাধনের চেষ্টা করতে পারি, কিন্তু অসাধ্যসাধনের চেষ্টা মূঢ়ত । বারা আমাদের চার দিকে রয়েছে তাদের মধ্যে যদি সত্যকার আগুন জালতে পারি, তবে সে আগুন আপনি আপনার শিখার পতাকাকে বহন করে চলবে । আমাদের সাধনাকে যদি ছোটো জায়গায় সার্থক করে তুলি, তা হলে বিশ্বের বিধাতা স্বয়ং সেখানে আসেন, এই ক্ষুদ্র চেষ্টার মধ্যে র্তার শক্তি দান করেন। সংখ্যায় আয়তনে বিশ্বাস কোরো না । সত্য ক্ষুদ্রায়তন হলেও দিগ বিজয়ী। আপনার অস্তরের দীনতাকে দূর করে ; তপস্তাকে সার্থক করে তোলো ; তা হলে এ ক্ষুত্র চেষ্টা দেশের সর্বত্র প্রসারিত হবে— শাখা থেকে প্রশাখায় বিস্তৃত হবে, বৃহৎ বনস্পতি হয়ে ছায়াদান করতে পারবে, ফলদান করতে পারবে । 8खाई ७७७४