পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পল্লীপ্রকৃতি (t.8& সমাজে বারা আপনার প্রাণকেনিঃশেষিত করে দান করছে প্রতিদানে তার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে না, এই আস্তায় ঋণ চিরদিনই জমতে থাকবে এ কখনো হতেই পারে না। অন্তত ভারতবর্ষে এমন একদিন ছিল যখন পল্লীবাসী, অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে দেশের জনসাধারণ, কেবল যে দেশের ধনের ভাগী ছিল তা নয়, দেশের বিষ্ঠাও তারা পেয়েছে নানা প্রণালী দিয়ে। এরা ধর্মকে শ্রদ্ধা করেছে, অন্যায় করতে ভয় পেয়েছে, পরম্পরের প্রতি সামাজিক কর্তব্যসাধনের দায়িত্ব স্বীকার করেছে। দেশের জ্ঞান ও ধর্মের সাধনা ছিল এদের সকলের মাঝখানে, এদের সকলকে নিয়ে। সেই দেওয়া-নেওয়ার সর্বব্যাপী সম্বন্ধ আজ শিথিল। এই সম্বন্ধ-ক্রটির মধ্যেই আছে অবশুম্ভাবী বিপ্লবের সূচনা। এক ধারেই সব-কিছু অাছে, আর-এক ধারে কোনো কিছুই নেই, এই ভারসামঞ্জস্তের ব্যাঘাতেই সভ্যতার নৌকো কাত হয়ে পড়ে। একান্ত আসামোই আনে প্রলয়। ভূগর্ত থেকে সেই প্রলয়ের গর্জন সর্বত্র শোনা যাচ্ছে । এই আসন্ন বিপ্লবের আশঙ্কার মধ্যে আজ বিশেষ করে মনে রাখবার দিন এসেছে যে, স্বারা বিশিষ্ট সাধারণ বলে গর্ব করে তারা সর্বসাধারণকে যে পরিমাণেই বঞ্চিত করে তার চেয়ে অধিক পরিমাণে নিজেকেই বঞ্চিত করে— কেননা, শুধু কেবল ঋণই যে পুীভূত হচ্ছে তা নয়, শান্তিও উঠছে জমে। পরীক্ষায়-পাস-করা পুথিগত বিষ্কার অভিমানে ধেন নিশ্চিন্ত না থাকি । দেশের জনসাধারণের মন যেখানে অজ্ঞানে অন্ধকার সেখানে কণ কণ জোনাকির অালো গর্তে পড়ে মরবার বিপদ থেকে আমাদের বঁাচাতে পারবে না। আজ পল্পী আমাদের অধিমরা ; যদি এমন কল্পনা করে আশ্বাস পাই যে, অন্তত আমরা আছি পুরো বেঁচে, তবে ভুল হবে, কেননা মুমূমুর সঙ্গে সজীবের সহযোগ মৃত্যুর দিকেই টানে। ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ চৈত্র ১৩s • অরণ্যদেবতা ঐনিকেতনে হলকর্ষণ ও বৃক্ষরোপণ -উৎসৰে কথিত .ே প্রথম পর্বে পৃথিবী ছিল পাবাণী, বন্ধ্যা, জীবের প্রতি তার করুণার কোনো লক্ষণ সেদিন প্রকাশ পায় নি। চারি দিকে অগ্নি-উজ্জীরণ চলেছিল, পৃথিবী ছিল ভূমিকম্পে বিচলিত। এমন সময় কোন স্বৰোগে বনলক্ষ্মী তার দূতীগুলিকে প্রেরণ করলেন পৃথিবীর এই জানে, চারিদিকে তার তৃণশল্পের অঞ্চল বিস্তীর্ণ হল, নগ্ন পৃথিবীর