পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

•ाहौथकृछि &be সঙ্গে মিলিত হতে পারে নি-পীর লোকেরা তাদের সম্পূর্ণ করে গ্রহণ করতে পারে নি। কী করে মিলবে । মাঝখানে যে বৈতরণী । শিক্ষিতদের দান পল্লীবাসী গ্রহণ করবে কোন আধারে। তাদের চিত্তভূমিকাই যে প্রস্তুত হয় নি। ষে জ্ঞানের মধ্যে সমস্ত মঙ্গলচেষ্টার বীজ নিহিত সেই জ্ঞানের দিকেই পল্লীবাসীদের শহরবাসীদের থেকে পৃথক্ করে রাখা হয়েছে। অন্ত কোনো দেশে পল্লীতে শহরে জ্ঞানের এমন পার্থক্য রাখা হয় নি, পৃথিবীর অন্যত্র নবযুগের নায়ক ধারা নিজেদের দেশকে নৃতন করে গড়ে তুলছেন তারা জ্ঞানের এমন পঙক্তিভেদ কোথাও করেন নি, পরিবেশনের পাতা একই। আমাদের দেশে একই ভাবে-যে সমস্ত দেশকে অনুপ্রাণিত করা যাবে এমন উপায় নেই। জামি তাই ধারা এখানে গ্রামের কাজ করতে আসেন তাদের বলি, শিক্ষাদানের ব্যবস্থা যেন এমন ভাব মনে রেখে না করা হয় যে, ওরা গ্রামবাসী, ওদের প্রয়োজন স্বল্প, ওদের মনের মতো করে যা-হয়-একটা গেয়ো ব্যবস্থা করলেই চলবে। গ্রামের প্রতি এমন অশ্রদ্ধা প্রকাশ যেন আমরা না করি। দেশের মধ্যে এই যে প্রকাণ্ড বিভেদ একে দূর করে জ্ঞানবিজ্ঞান, কী পত্নী কী নগর, সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে— সর্বসাধারণের কাছে সুগম করে দিতে হবে। গ্রামের লোকেরা থাকুক তাদের ভূত-প্রেত-ওঝা, তাদের অশিক্ষা অস্বাস্থ্য নিরানন্দ নিয়ে, তাদের জন্য শিক্ষার একটুখানি যে-কোনোরকম আয়োজন করলেই যথেষ্ট, এরকম অসম্মান যেন গ্রামবাসীদের না করি। এই অসম্মান জন্মায় শিক্ষার ভেঙ্গ থেকে। মন অহংকৃত হয় ; বলে, ‘ওরা চালিত হবে, আমরা চালনা করব দূর থেকে, উপর থেকে। এর ফলে অনেক সময় শিক্ষিত পল্লীহিতৈষীরা চাষীদের কাছে এমন-সব বিষয়ে মূখন্থ-করা উপদেশ দিতে আসেন হয়তে যে বিষয়ে চাষীরা তাদের চেয়ে ভালোই জানে। এর একটা দৃষ্টান্ত দিই। এক সময়ে আমার মনে হয়েছিল যে শিলাইদহে আলুর চাষ বিস্তৃত ভাবে প্রচলন করব। আমার প্রস্তাব শুনে কৃষিবিভাগের কর্তৃপক্ষ বললেন যে, আমার নিদিষ্ট জমিতে আলুর চাষ করতে হলে একশো মণ সার দরকার হবে ইত্যাদি। আমি কৃষিবিভাগের প্রকাও তালিকা -অনুসারে কাজ করলুম, ফসলও ফলল, কিন্তু ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের কোনোই সামঞ্জস্য রইল না। এ-সব দেখে আমার এক চাষী প্রজা বললে, “আমার পরে ভার দিন বাৰু। সে কৃষিবিভাগের তালিকাকে অবজ্ঞা করেও প্রচুর ফসল ফলিয়ে আমাকে লজ্জিত করলে । 、鱼 জামাদের শিক্ষিত লোকদের জ্ঞান যে নিফল হয়, অভিজ্ঞতা ষে পল্লীবাসীর কাজে লাগে না, তার কারণ আমাদের অহমিকা, যাতে আমাদের মিলতে দেয় না, ভোকে জাগিয়ে রাখে। তাই আমি বারংবার বলি, গ্রামবাসীদের অসন্মান কোরে না, ৰে