পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե Փ রবীন্দ্র-রচনাবলী করি তবে আমাদের নারীধর্মকে ধিক। তোমার অগোচরে নানা কৌশলে এতদিন এই কাজ করে এসেছি। ধার কোনো হুকুম কখনো ঠেলতে পারি নি, সকলের চেয়ে কঠিন অাজকের এই হকুম– এও জামাকে মানতে হবে। এই আমার দেবতাকে আজ তোমার হাতেই ছেড়ে দিয়ে জামি সরে দাড়াব। জানি আমার চেয়ে বড়ো রক্ষক র্তার মাথার উপরে আছেন। ছুদিন পরেই সমাজের সঙ্গে আমার সম্বন্ধ করিকম নিন্দায় ভরে উঠবে তা আমি জানি । এই লাঞ্ছনা আমি মাখায় করে নেব। কখনো মনে কোরো না চাতুরী করে তোমার স্ত্রীকে বাচিয়ে এই মাহুষকে আলাদা নালিশে জড়াতে পারবে। আমি চিরদিন তার পিছন পিছন থেকে শাস্তির শেষ পালা পর্যস্ত বাব। তুমি হুখে থেকে। তোমার ভয় নেই, ইচ্ছা করলেই তুমি নূতন সম্বিনী পাবে। আর যা কর আমাকে দয়া কোরো না। আমার চেয়ে অনেক বড়ো ধারা তাদের তুমি তা কর নি। সেই নিষ্ঠুরতার অংশ নিয়ে মাথা উচু করেই আমি তোমার কাছ থেকে বিদায় নেব। প্রাণপণে তোমার সেবা করেছি ভালোবেসে, প্রাণপণে তোমাকে বঞ্চনা করেছি কর্তব্যবোধে, এই তোমাকে জানিয়ে গেলুম। এর পরে হয়তো আর সময় পাব না।” সন্থর কথায় বাধা দিয়ে অনিল বলে উঠল, “বিজয়বাবু, আজ আমি ধরা দেব বলেই স্থির করে এসেছিলুম। আমার আর কোনো ভাবনা নেই। আমার কাজ শেষ হয়ে গেছে। আপনি সন্ধুর কথায় ভড়কাবেন না। ও একটি আসাধারণ মেয়ে, জন্মেছে আমাদের দেশে, একেবারে খাপছাড়া সমাজে। খুব ভালো করেই চিনেছি আমি ওকে, চিনি বলেই আপনাকে বলছি ও নিষ্কলঙ্ক । যে কঠিন কর্তব্য আমরা মাথায় •নিয়ে দাড়িয়েছি সেখানে ভালোবাসার কোনো ফাক নেই, আছে কেবল আপনাকে জলাগুলি দেওয়া । বিশ্বসংসারের লোক সদ্ধ সম্বন্ধে কিছু জানবে না, আপনার কোনো ভয় নেই। ওকে নিয়ে আপনি মন্দিরের স্বরঙ্গ পথ দিয়ে বাড়ি ফিরুন। আর আমি অন্ত দিক থেকে পুলিসের হাতে এখুনি ধরা দিচ্ছি। এইসঙ্গে একটি কথা আপনাদের জানিয়ে রাখি, জামাকে আপনারা বাধতে পারবেন না। রবিঠাকুরের একটা গান আমার কণ্ঠস্থ— আমারে বাধবি তোরা সেই বাধন কি তোদের আছে ।” হঠাৎ গেয়ে উঠল বিদেশী গলায়, মন্দিরের ভিত থর ধর করে কেঁপে উঠল গলার জোরে। অবাক হয়ে গেলেন ইনপেক্টারবাৰু। “এই গান অনেক বার গেয়েছি, জাবার গাইৰ, তার পরে চলব আফগানিস্থানের