পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী হয়ে জ্ঞানহীন কাটিল দু দিন বন্ধ হইল নাড়ী । এতবার তারে গেন্ধ ছাড়াবারে, এত দিনে গেল ছাড়ি । বহুদিন পরে আপনার ঘরে ফিরিতু সারিয়া তীর্থ— আজ সাথে নেই চিরসাথি সেই মোর পুরাতন ভূত্য । ১২ ফাল্গুন ১৩০১ দুই বিঘা জমি শুধু বিঘে দুই ছিল মোর তুই আর সবি গেছে ঋণে । বাবু বলিলেন, ‘বুঝেছ উপেন, এ জমি লইব কিনে ? কহিলাম আমি, ‘তুমি ভূস্বামী, ভূমির অন্ত নাই । চেয়ে দেখে মোর আছে বড়ো-জোর মরিবার মতো ঠাই ।” শুনি রাজা কহে, বাপু, জান তো হে, করেছি বাগানথান, পেলে দুই বিঘে প্রস্থে ও দীঘে সমান হইবে টানা— ওটা দিতে হবে।’ কহিলাম তবে বক্ষে জুড়িয়া পাণি সজল চক্ষে, করুন রক্ষে গরিবের ভিটেখানি । সপ্ত পুরুষ যেথায় মানুষ সে মাটি সোনার বাড়া, দৈন্তের দায়ে বেচিব সে মায়ে এমনি লক্ষ্মীছাড়া ? আঁখি করি লাল রাজা ক্ষণকাল রহিল মৌনভাবে, কহিলেন শেষে ক্রর হাসি হেসে আচ্ছ, সে দেখা যাবে। পরে মাস দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে বাহির হইন্স পথে— করিল ডিক্রী, সকলি বিক্রি মিথ্য দেনার খতে । এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি— রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি । , মনে ভাবিলাম মোরে ভগবান রাখিবে না মোহগর্তে, তাই লিখি দিল বিশ্বনিখিল বিঘার পরিবর্তে । । সন্ন্যাসীবেশে ফিরি দেশে দেশে হইয়া সাধুর শিস্যকত হেরিলাম মনোহর ধাম, কত মনোরম দৃপ্ত !