পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉》● রবীন্দ্র-রচনাবলী সাধু বসি তৃণাসনে ; কহিলেন নমি তার পায়ে, ‘হেরো প্রভু, স্বর্ণশীর্ষ নৃপতিনির্মিত নিকেতন অভ্ৰভেদী দেবালয়, তারে কেন করিয়া বর্জন দেবতার স্তবগান গাহিতেছ পথপ্রাস্তে বসে ? সে মন্দিরে দেব নাই কহে সাধু। রাজা কহে রোষে, ‘দেব নাই! হে সন্ন্যাসী, নাস্তিকের মতো কথা কহ। রত্নসিংহাসন-পরে দীপিতেছে রতনবিগ্রহ— শূন্য তাহ ? 事 শূন্ত নয়, রাজদন্তে পূর্ণ সাধু কহে, “আপনায় স্থাপিয়াছ, জগতের দেবতারে নহে ? ভ্র কুঞ্চিয় কহে রাজা, ‘বিংশ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা দিয়৷ রচিয়াছি অনিন্দিত যে মন্দির অম্বর ভেদিয়া, পুজামস্ত্রে নিবেদিয়া দেবতারে করিয়াছি দান, তুমি কহ সে মন্দিরে দেবতার নাহি কোনো স্থান!” শাস্ত মুখে কহে সাধু, যে বৎসর বহ্নিদাহে দীন বিংশতি সহস্র প্রজা গৃহহীন, অন্নবস্ত্রহীন, দাড়াইল দ্বারে তব, কেঁদে গেল ব্যর্থ প্রার্থনায় অরণ্যে, গুহার গর্তে, পথপ্রান্তে তরুর ছায়ায়, অশ্বখবিদীর্ণ জীর্ণ মন্দিরপ্রাঙ্গণে, সে বৎসর বিংশ লক্ষ মুদ্রা দিয়া রচি তব স্বর্ণদৃপ্ত ঘর দেবতারে সমপিলে । সে দিন কহিল ভগবান— ‘আমার অনাদি ঘরে অগণ্য আলোক দীপ্যমান অনন্ত নীলিমা-মাঝে ; মোর ঘরে ভিত্তি চিরন্তন সত্য, শাস্তি, দয়া, প্রেম ৷ দীনশক্তি যে ক্ষুদ্র কৃপণ নাহি পারে গৃহ দিতে গৃহহীন নিজ প্রজাগণে , সে অামারে গৃহ করে দান ? চলি গেলা সেই ক্ষণে