পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> $ २ রবীন্দ্র-রচনাবলী শুনে রামায়ণ-কথা ; সন্ন্যাসী সাধুরে । ঘরে অগনি আশীর্বাদ করায় শিশুরে । বিশ্বমাঝে আপনারে রাখি সর্বনীচে সবার প্রসন্নদৃষ্টি অভাগী মাগিছে আপন সস্তান লাগি । সূর্য চন্দ্র হতে পশুপক্ষী পতঙ্গ অবধি কোনোমতে কেহ পাছে কোনো অপরাধ লয় মনে, পাছে কেহ করে ক্ষোভ, অজানা কারণে পাছে কারো লাগে ব্যথা– সকলের কাছে আকুল-বেদন-ভরে দীন হয়ে আছে। যখন বছর দেড় বয়স শিশুর যকৃতের ঘটিল বিকার ; জরাতুর দেহখানি শীর্ণ হয়ে আসে। দেবালয়ে মানিল মানত মাতা, পদাযুত লয়ে করাইল পান, হরিসংকীর্তন-গানে কঁাপিল প্রাঙ্গণ। ব্যাধি শান্তি নাহি মানে । কাদিয়া শুধালো নারী, ব্রাহ্মণ ঠাকুর, এত দুঃখে তবু পাপ নাহি হল দূর ? দিনরাত্রি দেবতার মেনেছি দোহাই, দিয়েছি এত যে পূজা তবু রক্ষা নাই ? তবু কি নেবেন তারা আমার বাছারে ? এত ক্ষুধা দেবতার ? এত ভারে ভারে নৈবেদ্য দিলাম থেতে বেচিয়া গহনা, সর্বস্ব খাওয়াম, তবু ক্ষুধা মিটিল না ? ব্রাহ্মণ কহিল, 'বাছ, এ যে ঘোর কলি । অনেক করেছ বটে তবু এও বলি, আজকাল তেমন কি ভক্তি আছে কারো ? সত্যযুগে যা পারিত তা কি আজ পারে ? দানবীর কর্ণ-কাছে ধর্ম যবে এসে ।