পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শারদোৎসব । 8 * * উপনন্দ । আমি যে ঋণ স্বীকার করেছিলেম তোমার কাছে এই অপমান সন্থ করেই তার থেকে মুক্তি গ্রহণ করলেম। বাস, চুকে গেল। [ প্রস্থান লক্ষেশ্বর । ওরে ; সব ঘোড়সওয়ার আসে কোথা থেকে ! রাজা আমার গজমোতির খবর পেলে নাকি ! এর চেয়ে উপনন্দ যে ছিল ভালো ! এখন কী করি! (সন্ন্যাসীকে ধরিয়া) ঠাকুর, তোমার পায়ে ধরি, তুমি ঠিক এইখানটিতে বোলো— এইযে এইখানে— আর-একটু বা দিকে সরে এসো— এই হয়েছে। খুব চেপে বোসো। রাজাই আস্থক আর সম্রাটই আস্থক তুমি কোনোমতেই এখান থেকে উঠে না। তা হলে আমি তোমাকে খুশি করে দেব। ঠাকুরদাদা। আরে, লখা করে কী ! হঠাৎ খেপে গেল নাকি ! । লক্ষেশ্বর। ঠাকুর, আমি তবে একটু আড়ালে যাই। আমাকে দেখলেই রাজার টাকার কথা মনে পড়ে যায়। শত্রুরা লাগিয়েছে আমি সব টাকা পুতে রেখেছি— শুনে অবধি রাজা যে কত জায়গায় কূপ খুড়তে আরম্ভ করেছেন তার ঠিকানা নেই। জিজ্ঞাসা করলে বলেন, প্রজাদের জলদান করছেন। কোন দিন আমার ভিটেবাড়ির ভিত কেটে জলদানের হুকুম হবে, সেই ভয়ে রাত্রে ঘুমুতে পারি নে। [ প্রস্থান রাজদূতের প্রবেশ রাজদূত। সন্ন্যাসীঠাকুর, প্রণাম হই। আপনিই তো অপূর্বানন্দ ? সন্ন্যাসী । কেউ কেউ আমাকে তাই বলেই তো জানে । রাজদূত। আপনার অসামান্ত ক্ষমতার কথা চার দিকে রাষ্ট্র হয়ে গেছে। আমাদের মহারাজ সোমপাল আপনার সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছা করেন । সন্ন্যাসী। যখনই আমার প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন তখনই আমাকে দেখতে পাবেন। রাজদূত। আপনি তা হলে যদি এক বার— সন্ন্যাসী । আমি একজনের কাছে প্রতিশ্রুত আছি এইখানেই আমি আচল হয়ে বসে থাকব । অতএব আমার মতো অকিঞ্চন অকৰ্মণ্যকেও তোমার রাজার যদি বিশেষ প্রয়োজন থাকে তা হলে তাকে এইখানেই আসতে হবে । so রাজদূত। রাজ্যেষ্ঠান অতি নিকটেই, ওইখানেই তিনি অপেক্ষা করছেন— সন্ন্যাসী । যদি নিকটেই হয় তবে তো তার আসতে কোনো কষ্ট হবে না। রাজদূত। যে আজ্ঞ, তবে ঠাকুরের ইচ্ছা তাকে জানাই গে। [ প্রস্থান ঠাকুরদাদা। প্রভু, এখানে রাজসমাগমের সম্ভাবনা হয়ে এল— আমি তবে বিদায় श्झे ।