পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

f .." o .الم ৪১২ * র do তৃতীয় ব্যক্তি। বাবা, তোমার চেহারাটি কিন্তু ভালো। তুমি মন্ত্রতন্ত্র কিছু শিখেছ ? সন্ন্যাসী । শেখবার ইচ্ছা তো আছে, কিন্তু শেখায় কে ? তৃতীয় ব্যক্তি। একটি লোক আছে বাবা— সে থাকে ভৈরবপুরে, লোকট। বেতালসিদ্ধ। একটি লোকের ছেলে মারা যাচ্ছিল, তার বাপ এসে ধরে পড়তেই লোকটা করলে কী, সেই ছেলেটার প্রাণপুরুষকে একটা নেকড়ে বাঘের মধ্যে চালান করে দিলে। বললে বিশ্বাস করবে না— ছেলেটা ম’ল বটে, কিন্তু নেকড়েটা আজও দিব্যি বেঁচে আছে। না, হাসছ কী ? অামার সম্বন্ধী স্বচক্ষে দেখে এসেছে । সেই নেকড়েটাকে মারতে গেলে বাপ লাঠি হাতে ছুটে আসে। তাকে দু-বেলা ছাগল খাইয়ে লোকটা ফতুর হয়ে গেল। বিদ্যে যদি শিখতে চাও, তো সেই সন্ন্যাসীর কাছে যাও । প্রথম ব্যক্তি । ওরে চল রে, বেলা হয়ে গেল। সন্ন্যাসী-ফন্ন্যাসী সব মিথ্যে । সে কথা আমি তো তখনই বলেছিলেম । আজকালকার দিনে কি আর সেরকম যোগবল আছে ! 鯛 i দ্বিতীয় ব্যক্তি। সে তো সত্যি। কিন্তু আমাকে যে কালুর মা বললে, তার ভাগনে নিজের চক্ষে দেখে এসেছে, সন্ন্যাসী এক টান গাজা টেনে কলকেট। যেমনি উপুড় করলে অমনি তার মধ্যে থেকে এক ভাড় মদ আর একটা আস্ত মড়ার মাথার খুলি বেরিয়ে পড়ল । তৃতীয় ব্যক্তি । বল কী, নিজের চক্ষে দেখেছে ? দ্বিতীয় ব্যক্তি। ই রে, নিজের চক্ষে বৈকি। তৃতীয় ব্যক্তি। আছে রে আছে, সিদ্ধপুরুষ আছে। ভাগ্যে যদি থাকে, তবে তো দর্শন পাব। তা, চল-ন ভাই, কোন দিকে গেল একবার দেখে আসি গে। [ প্রস্থান সন্ন্যাসী। ( বালকদের প্রতি ) বাবা, আজ যে তোমাদের সব সোনার রঙের কাপড় পরতে হবে। ছেলেরা । সোনার রঙের কাপড় কেন ঠাকুর ? সন্ন্যাসী । বাইরে ষে আজ সোনা ঢেলে দিয়েছে। তারই সঙ্গে আমাদেরও আজ অস্তরে বাইরে মিলে যেতে হবে তো, নইলে এই শরতের উৎসবে আমরা যোগ দিতে পারব কী করে ? আজ এই আলোর সঙ্গে আকাশের সঙ্গে মিলব বলেই তো উৎসব । ছেলের। সোনার রঙের কাপড় কোথায় পাব ঠাকুর ?