পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ટર রবীন্দ্র-রচনাবলী সেই বুদ্ধি বলিতেছে যে ঈশ্বর নাই । অতএব ঈশ্বর বলিতেছেন যে ঈশ্বর নাই অথচ তোমরা তার মুখের উপর জবাব দিয়া বলিতেছ যে ঈশ্বর আছেন। এই পাপের শাস্তিস্বরূপে তেত্রিশ কোটি দেবতা তোমাদের দুই কান ধরিয়া জরিমানা আদায় করিতেছে । বালক-বয়সে জগমোহনের বিবাহ হইয়াছিল। যৌবনকালে যখন তার স্ত্রী মারা যান তার পূর্বেই তিনি ম্যালথস পড়িয়াছিলেন ; আর বিবাহ করেন নাই । র্তার ছোটাে ভাই হরিমোহন ছিলেন শচীশের পিতা। তিনি তার বড়ো ভাইয়ের এমনি উন্টা প্রকৃতির যে, সে কথা লিখিতে গেলে গল্প সাজানো বলিয়া লোকে সন্দেহ করিবে । কিন্তু গল্পই লোকের বিশ্বাস কাড়িবার জন্য সাবধান হইয়া চলে, সত্যের সে দায় নাই বলিয়া সত্য অদ্ভূত হইতে ভয় করে না । তাই, সকাল এবং বিকাল যেমন বিপরীত, সংসারে বড়ো ভাই এবং ছোটাে ভাই তেমনি বিপরীত– এমন দৃষ্টাস্তের অভাব নাই । হরিমোহন শিশুকালে অস্থস্থ ছিলেন। তাগাতাবিজ, শাস্তি-স্বস্ত্যয়ন, সন্ন্যাসীর জটানিংড়ানো জল, বিশেষ বিশেষ পীঠস্থানের ধুলা, অনেক জাগ্ৰত ঠাকুরের প্রসাদ ও চরণামৃত, গুরু-পুরোহিতের অনেক টাকার আশীর্বাদে তাকে যেন সকল অকল্যাণ হইতে গড়বন্দী করিয়া রাখা হইয়াছিল । বড়ো বয়সে তার আর ব্যামো ছিল না, কিন্তু তিনি যে বড়োই কাহিল সংসার হইতে এ সংস্কার ঘুচিল না । কোনোক্রমে তিনি বাচিয়া থাকুন, এর বেশি তার কাছে কেহ কিছু দাবি করিত না । তিনিও এ সম্বন্ধে কাহাকেও নিরাশ করিলেন না, দিব্য বঁচিয়া রহিলেন । কিন্তু শরীরটা যেন গেল-গেল এই ভাব করিয়া সকলকে শাসাইয়া রাখিলেন। বিশেষত তার পিতার অল্প বয়সে মৃত্যুর নজিরের জোরে মা-মাসির সমস্ত সেবাযত্ব তিনি নিজের দিকে টানিয়া লইলেন। সকলের আগে তার আহার, সকলের হইতে র্তার আহারের আয়োজন স্বতন্ত্র, সকলের চেয়ে র্তার কাজ কম, সকলের চেয়ে তার বিশ্রাম বেশি। কেবল মা-মাসির নয়, তিনি যে তিন-ভুবনের সমস্ত ঠাকুর-দেবতার বিশেষ জিন্মায় এ তিনি কখনো ভুলিতেন না। কেবল ঠাকুর-দেবতা নয়, সংসারে যেখানে যার কাছে যে পরিমাণে সুবিধা পাওয়া যায় তাকে তিনি সেই পরিমাণেই মানিয়া চলতেন ; থানার দারোগ, ধনী প্রতিবেশী, উচ্চপদের রাজপুরুষ, খবরের ཨཱ་ཨཱ་ཨཱ་བས་“ས་ সকলকেই যথোচিত ভয় ভক্তি করিতেন— গো-ব্রাহ্মণের তো ক l l