পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

l f f : * J & | R T | | | # | o o \ § , i I * * i * , Two, ' r" a * d r f * 3 s | i # l k منتشره কলিকাতায় একটি বাড়ি এবং যাহাতে খাওয়-পরার কষ্ট না হয় এমন সংস্থান করিয়া দিলেন । ইহার উপরে গহনাপত্র কম দেন নাই । শিবতোষকে তিনি আপন আপিসে কাজ শিখাইবার অনেক চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু শিবতোষের স্বভাবতই সংসারে মন ছিল না। একজন গনংকার তাহাকে একদিন বলিয়া দিয়াছিল কোন এক বিশেষ যোগে বৃহস্পতির কোন এক বিশেষ দৃষ্টিতে সে জীবন্মুক্ত হইয়া উঠিবে। সেই দিন হইতে জীবন্মুক্তির প্রত্যাশায় সে কাঞ্চন এবং অন্যান্ত রমণীয় পদার্থের লোভু পরিত্যাগ করিতে বসিল । ইতিমধ্যে লীলানন্দস্বামীর কাছে সে মন্ত্র লইল । এ দিকে ব্যবসায়ের উল্টা হাওয়ার ঝাপট খাইয়। অন্নদার ভরা পালের ভাগ্যতরী একেবারে কাত হইয়া পড়িল ৷ এখন বাড়িঘর সমস্ত বিক্রি হইয়া আহার চলা দায় । একদিন শিবতোষ সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির ভিতরে আসিয়া স্ত্রীকে বলিল, স্বামীজি আসিয়াছেন, তিনি তোমাকে ডাকিতেছেন, কিছু উপদেশ দিবেন। দামিনী বলিল, না, এখন আমি যাইতে পারিব না । আমার সময় নাই । সময় নাই ! শিবতোষ কাছে আসিয়া দেখিল, দামিনী অন্ধকার ঘরে বসিয়া গহনার বাক্স খুলিয়া গহনাগুলি বাহির করিয়াছে। জিজ্ঞাসা করিল, এ কী করিতেছ ? দামিনী কহিল, আমি গহনা গুছাইতেছি । এই জন্যই সময় নাই ! বটে। পরদিন দামিনী লোহার সিন্ধুক খুলিয়া দেখিল তার গহনার বাক্স নাই। স্বামীকে জিজ্ঞাসা করিল, আমার গহনা ? স্বামী বলিল, সে তো তুমি তোমার গুরুকে নিবেদন করিয়াছ। সেই জন্যই তিনি ঠিক সেই সময়ে তোমাকে ডাকিয়াছিলেন, তিনি যে অন্তর্যামী ; তিনি তোমার কাঞ্চনের লোভ হরণ করিলেন । দামিনী আগুন হইয়া কহিল, দাও আমার গহনা। স্বামী জিজ্ঞাসা করিল, কেন, কী করিবে ? দামিনী কহিল, আমার বাবার দান, সে আমি আমার বাবাকে দিব । শিবতোষ কহিল, তার চেয়ে ভালো জায়গায় পড়িয়াছে | বিষয়ীর পেট না ভরাইয়া ভক্তের সেবায় তাহার উৎসর্গ হইয়াছে । এমনি করিয়া ভক্তির দক্ষ্যবৃত্তি শুরু হইল । জোর করিয়া দামিনীর মন হইতে সকল প্রকার বাসনা-কামনার ভূত ঝাড়াইবার জন্য পদে পদে ওঝার উৎপাত চলিতে লাগিল । যে সময়ে দামিনীর বাপ এবং তার ছোটো ছোটো ভাইরা উপবাসে মরিতেছে সেই সময়ে বাড়িতে প্রত্যহ ষাট-সত্তর জন ভক্তের সেবার অন্ন তাকে