পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$款 রবীন্দ্র-রচনাবলী গেছে। আমরা দল ছাড়ার অল্পকাল পরে সাপ্তাহিক কাগজগুলির পূজার সংখ্যা বাহির হইয়াছে; সুতরাং আমাদের হাড়কাঠ তৈরি ছিল, রক্তপাতের ক্রটি হয় নাই । শাস্ত্রে স্ত্রীপশু-বলি নিষেধ, কিন্তু মামুষের বেলায় ওইটেতেই সব চেয়ে উল্লাস। কাগজে দামিনীর স্পষ্ট করিয়া নাম ছিল না, কিন্তু বদনামটা কিছুমাত্র অস্পষ্ট যাতে না হয় সে কৌশল ছিল। কাজেই দূর সম্পর্কের মাসির বাড়ি দামিনীর পক্ষে ভয়ংকর অঁাট श्ड्रेग्न छेठिल । ইতিমধ্যে দামিনীর বাপ মা মারা গেছে, কিন্তু ভাইরা কেহ-কেহ আছে বলিয়াই জানি । দামিনীকে তাদের ঠিকান জিজ্ঞাসা করিলাম। সে ঘাড় নীড়িল ; বলিল, তারা বড়ো গরিব । I আসল কথা, দামিনী তাদের মুশকিলে ফেলিতে চায় না। ভয় ছিল, ভাইরাও পাছে জবাব দেয় এখানে জায়গা নাই’ । সে আঘাত যে সহিবে না। জিজ্ঞাসা করিলাম, তা হইলে কোথায় যাইবে ? দামিনী বলিল, লীলানন্দস্বামীর কাছে । লীলানন্দস্বামী । খানিকক্ষণ আমার মুখ দিয়া কথা বাহির হইল না। অদৃষ্টের এ কী নিদারুণ লীলা । বলিলাম, স্বামীজি কি তোমাকে লইবেন ? দামিনী বলিল, খুশি হইয়া লইবেন। দামিনী মানুষ চেনে। যার দলচরের জাত মানুষকে পাইলে সত্যকে পাওয়ার চেয়ে তার বেশি খুশি হয়। লীলানন্দস্বামীর ওখানে দামিনীর জায়গার টানাটানি হইবে না ७छे ठिक- दिख् ঠিক এমন সংকটের সময় বলিলাম, দামিনী, একটি পথ আছে, যদি অভয় দাও তো বলি । দামিনী বলিল, বলে, শুনি । h আমি বলিলাম, যদি আমার মতে মানুষকে বিবাহ করা তোমার পক্ষে সম্ভব হয়, তবে— k দামিনী আমাকে থামাইয়া দিয়া বলিল, ও কী কথা বলিতেছ শ্ৰীবিলাসবাৰু ? তুমি কি পাগল হইয়াছ ? I আমি বলিলাম, মনে করে-না পাগলই হইয়াছি। পাগল হইলে অনেক কঠিন কথা অতি সহজে মীমাংসা করিবার শক্তি জন্মায়। পাগলামি আরব্য-উপন্যাসের সেই জুতা যা পায়ে দিলে সংসারের হাজার হাজার বাজে কথাগুলো একেবারে ডিঙাইয়া যাওয়া যায়।