পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তার পরে এক জায়গায় আছে— । . . . . . . . . সকরুণ তব মন্ত্র-সাথে * মৰ্মভেদী যত দুঃখ বিস্তারিয়া যাক বিশ্ব-’পরে। । # এই দুটাে লাইনেরও ব্যাখ্যা চেয়েছ সেদিনৰঞ্জ বৈশাখমধ্যাহ্নের সকরুণতা আমার মনে বেজেছিল বলেই ওটা লিখতে পেরেছি। ধুধু করছে মাঠ, বা বা করছে রোদুর, কাছে আমলকী গাছগুলোর পাতা ঝিলমিল করছে, ঝাউ উঠছে নিশ্বসিত হয়ে, ঘুঘু ডাকছে স্নিগ্ধ স্বরে— গাছের মর্মর, পাখিদের কাকলি, দূর আকাশে চিলের ডাক, রাঙা মাটির ছায়াশূন্ত রাস্তা দিয়ে মন্থরগমন ক্লান্ত গোরুর গাড়ির চাকার আর্তস্বর, সমস্তটা জড়িয়ে মিলিয়ে যে একটি বিশ্বর্যাপী করুণার স্বর উঠতে থাকে নিঃসঙ্গ বাতায়নে বসে সেটি শুনেছি, অনুভব করেছি, আর তাই লিখেছি। 4 لی۔ বৈশাখের অনুচরীর যে ছায়ামৃত্য দেখি সেট। অদৃশ্য নয় তো কী ? মৃত্যের ভঙ্গী দেখি, ভাব দেখি, কিন্তু নটা কোথায় ? কেবল একটা আভাস মাঠের উপর দিয়ে ঘুরে যায়। তুমি বলছ, তুমি তার ধ্বনি শুনেছ। কিন্তু যে দিগন্তে আমি তার ঘূর্ণিগতিটাকে দেখেছি সেখান থেকে কোনো শব্দই পাই নি। বৃহৎ ভূমিকার মধ্যে তরুরিক্ত বিশাল প্রাস্তরে যে চঞ্চল আবির্ভাব ধূসর আবর্তনে দেখা যায় তার রূপ নয় তার গতিই অনুভব করি, তার শব্দ তো শুনিই নে । এ স্থলে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বাইরে যাবার জো নেই। # —পত্র । ৪ কাতিক ১৩৩৯ 'ভ্রষ্ট লগ্ন’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ গ্রামোফোন রেকর্ডের জন্য আবৃত্তি করেন। ঐ আবৃত্তিতে মুদ্রিত পাঠ হইতে কতকগুলি অনৈক্য দেখা যায় ; সেগুলি হইল— প্রত্যেক স্তবকের শেষছত্রে সেই স্থলে এই, দ্বিতীয় স্তবকের দ্বিতীয় ছত্রে পরিতেছিলেম ও অষ্টম ছত্রে ‘গিয়েছে’। ক্ষণিকা ক্ষণিক ১৩০৭ সালের শ্রাবণ মাসে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। ক্ষণিকার পাণ্ডুলিপির সাহায্যে রচনাবলী-সংস্করণে বহু কবিতার রচনার কাল ও স্থান প্রভৃতি নির্দিষ্ট হইয়াছে।