পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

r f ‘. ኽ .ui ! ί ‘. . . . * I

  • l |

‘আবির্ভাবী কবিতা সম্বন্ধে কবি চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিয়াছেন— কাব্যের একটা বিভাগ আছে যা গানের সহজাতীয় । সেখানে ভাষা কোনো নির্দিষ্ট অর্থ জ্ঞাপন করে না, একটা মায়া রচনা করে, যে মায়া ফাঙ্কন মাসের দক্ষিণ হাওয়ায়, যে মায়া শরৎ ঋতুতে স্বৰ্ষান্তকালের মেঘপুঞ্জে। মনকে রাঙিয়ে তোলে ; এমন কোনো কথা বলে না যাকে বিশ্লেষণ করা সম্ভব । * . . . ক্ষণিকার ‘আবির্ভাৰ কবিতায় একটা কোনো অস্তরগুঢ় মানে থাকতে পারে ; কিন্তু সেটা গৌণ ; সমগ্র ভাবে কবিতাটার একটা স্বরূপ আছে —সেটা যদি মনোহর হয়ে থাকে তা হলে আর কিছু বলবার নেই। তবু আবির্ভাব কবিতায় কেবল স্বর নয়, একটা কোনো কথা বলা হয়েছে ; সেটা হচ্ছে এই ষে, এক সময়ে মনপ্রাণ ছিল ফাল্গুন মাসের জগতে, তখন জীবনের কেন্দ্রস্থলে একটি রূপ দেখা দিয়েছে আপন বর্ণ গন্ধ গান নিয়ে, সে বসন্তের রূপ, যৌবনের আবির্ভাব — তার আশা-আকাঙ্ক্ষায় একটি বিশেষ বাণী ছিল । তার পরে জীবনের অভিজ্ঞতা প্রশস্ততর হয়ে এল। তখন সেই প্রথম-যৌবনের বাসন্তী রঙের আকাশে ঘনিয়ে এল বর্ষার সজল শ্যাম সমারোহ— জীবনে বাণীর বদল হল, বীণায় আর-এক সুর বাধতে হবে ; সেদিন যাকে দেখেছিলুম এক বেশে এক ভাবে, আজ তাকে দেখছি আর-এক মূর্তিতে, খুজে বেড়াচ্ছি তারই অভ্যর্থনার নূতন আয়োজন। জীবনের ঋতুতে ঋতুতে যার নূতন প্রকাশ, সে এক হলেও তার জন্যে একই আসন মানায় না । —পত্র । ৪ অক্টোবর 〉?\○○ মোহিতচন্দ্র সেন কর্তৃক সম্পাদিত কাব্যগ্রন্থের ‘লীলা খণ্ডে ক্ষণিকার ‘ভীরুতা ‘মাতাল প্রভৃতি অনেকগুলি কবিতা স্থান পাইয়াছিল। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ লিখিয়াছিলেন— ভালোবাসা আপনাকে প্রকাশ করিবার ব্যাকুলতায় কেবল সত্যকে নহে, অলীককে — সংগতকে নহে, অসংগতকে আশ্রয় করিয়া থাকে। স্নেহ আদর করিয়া সুন্দর মুখকে পোড়ারমুখী বলে, মা আদর করিয়া ছেলেকে দুষ্ট, বলিয়া মারে, ছলনাপূর্বক ভৎসন করে। সুন্দরকে স্বন্দর বলিয়া যেন আকাজক্ষার তৃপ্তি হয় না, ভালোবাসার ধনকে ভালোবাসি বলিলে যেন ভাষায় কুলাইয়া উঠে না, সেইজন্ত সত্যকে সত্যকথার দ্বারা প্রকাশ করা সম্বন্ধে একেবারে হাল ছাড়িয়া দিয়া ঠিক তাহদের বিপরীত পথ অবলম্বন করিতে হয় ; তখন বেদনার অঙ্গকে হাস্তচ্ছটায়, গভীর কথাকে কৌতুক-পরিহাসে এবং