পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী গেলে সেই বিশ্বচিত্তলোকে, যেথা সুগভীর বাজে অনন্তের বীণা, যার শব্দহীন সংগীতধারায় ছুটেছে রূপের বন্যা গ্রহে সূর্যে তারায় তারায় । সেথা তুমি অগ্রজ আমার ; যদি কভু দেখা হয়, পাব। তবে সেথা তব কোন অপরূপ পরিচয় কোন ছন্দে, কোন রূপে ? যেমনি অপূর্ব হােক-নাকো, তবু আশা করি যেন মনের একটি কোণে রাখ ধরণীর ধূলির স্মরণ, লাজে ভয়ে দুঃখে সুখে বিজড়িত— আশা করি, মর্তজন্মে ছিল তব মুখে যে বিনম্র স্নিগ্ধ হাস্য, যে স্বচ্ছ সতেজ সরলতা, সহজ সত্যের প্রভা, বিরল সংযত শাস্ত কথা, محھے অমর্তলোকের দ্বারে- ব্যর্থ নাহি হােক এ কামনা । আষাঢ় ১৩২৯ শিলঙের চিঠি শ্ৰীমতী শোভনা দেবী ও শ্ৰীমতী নলিনী দেবী কল্যাণীয়াসু ছন্দে লেখা একটি চিঠি চেয়েছিলে মোর কাছে, ভাবছি বসে এই কলমের আর কি তেমন জোর আছে । তরুণ বেলায় ছিল আমার পদ্য লেখার বদ-অভ্যাস, মনে ছিল হই বুঝি বা বাল্মীকি কি বেদব্যাস, কিছু না হােক ‘লঙফেলো’দের হব আমি সমান তো— এখন মাথা ঠাণ্ডা হয়ে হয়েছে সেই ভ্ৰমান্ত । এখন শুধু গদ্য লিখি, তাও আবার কদাচিৎ, আসল ভালো লাগে খাটে থাকতে পড়ে সদা চিৎ ৷ যা হােক একটা খ্যাতি আছে অনেক দিনের তৈরি সে, শক্তি এখন কম পড়েছে তাই হয়েছে। বৈরী সে ; সেই সেকালের নেশা। তবু মনের মধ্যে ফিরছে তো, নতুন যুগের লোকের কাছে বড়াই রাখার ইচ্ছে তো ‘কলম লে আও, কাগজ লে। আও, কালি লে আও, ধা করকে ৷” ভাবছি যদি তোমরা দুজন বছর তিরিশ পূর্বেতে গরজ করে আসতে কাছে, কিছু তবু সুর পেতে । ” সেদিন যখন আজকে দিনের বাপ-খুড়ো সব নাবালক, বর্তমানের সুবুদ্ধিরা প্ৰায় ছিল সব হাবা লোক, , তখন যদি বলতে আমায় লিখতে পয়ার মিল করে, লাইনগুলো পোকার মতো বেরোত পিল পিল করে । পঞ্জিকাটা মানো না কি ? দিন দেখাটায় লক্ষ নেই ? লগ্নটি সব বইয়ে দিয়ে আজ এসেছ অক্ষণেই ।