পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী হাস্যমুখে উদ্ধৰ্ব্ব-পানে চায় ; দেখে, অরুণ আলোর তরণী দিয়েছে খেয়া, হংস শুভ্ৰ মেঘের ঝালর (11 CGri V5< b&oi\5°Ned CGr ওরে, এতক্ষণে বুঝি তারা-ঝরা নিৰ্ব্বরের স্ৰোতঃপথে পথ খুঁজি খুঁজি গেছে সাত-ভাই চম্পা ; কেতকীর রেণুতে রেণুতে ছেয়েছে। যাত্রার পথ ; দিগবন্ধুর বেণুতে বেণুতে বেজোছে ছুটির গান ; ভাটার নদীর ঢেউগুলি মুক্তির কল্লোলে মাতে, নৃত্য বেগে উন্ধের্ব বাহু তুলি উচ্ছলিয়া বলে, “চলো, চালো ।” বাউল উত্তরে-হাওয়া ধেয়েছে দক্ষিণ মুখে, মরণের রুদ্র নেশা-পাওয়া ; বাজায় অশান্ত ছন্দে তালপল্লবের করতাল, প্ৰান্তরের প্রান্তে প্ৰান্তে কাশের মঞ্জরী বঁচাপে তারা ভয়কুণ্ঠ উৎকণ্ঠিত সুখে— বলে, “বৃস্তবন্ধহাৱা যাব উদগমের পথে, যাব আনন্দিত সৰ্ব্বনাশে, রিক্তবৃষ্টি মেঘ-সাথে, সৃষ্টিছাড়া ঝড়ের বাতাসে, যাব- যেথা শংকরের টলমল চরণপাত নেন। জাহ্নবী তরঙ্গ মন্দ্ৰ— মুখরিত তাণ্ডবা-মাতনে গেছে উড়ে জটাভ্ৰষ্ট ধুতুরার ছিন্নভিন্ন দল, কক্ষচ্যুত ধূমকেতু লক্ষ্যহারা প্ৰলয়-উজজুল আত্মঘাত মদমত্ত আপনারে দীর্ণ কী কৰ্ণ করে নিমািম উল্লাসবেগে খণ্ড খণ্ড উল্কাপিণ্ড ঝরে, কন্টকিয়া তোলে ছায়াপথ { * ওরা ভোকে বলে, “কবি, সে তীর্থে কি তুমি সঙ্গে যাবে, যেথা অস্তগামী রবি যেথা তার সর্বশেষ রশ্মিটির বুরক্তিম জবায় সাজায় অন্তিম অস্কৰ্য্য ; যেথায় নিঃশব্দ বেণু-’পরে সংগীত স্তম্ভিত থাকে মরণের নিস্তব্ধ অধিৱে ।” কবি বলে, “যাত্রী আমি, চলিব রাত্রির নিমন্ত্রণে যেখানে সে চিরন্তন দেয়ালির উৎসব প্ৰাঙ্গণে। মৃত্যুদূত নিয়ে গেছে আমার আনন্দদীপগুলি, যেথা মোর জীবনের প্রত্যুষের সুগন্ধি শিউলি মাল্য হয়ে গাথা আছে। অনন্তের অঙ্গদে কুণ্ডলে ইন্দ্ৰাণীর স্বয়ম্বর-বরমাল্য সাথে ; দলে দলে যেথা মোর আকৃতাৰ্থ আশাগুলি, অসিদ্ধ সাধনা, মন্দির-অঙ্গন দ্বারো প্ৰতিহত কত আরাধনা