পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী বসন্তের বন্যাস্রোতে সন্ন্যাসের হল অবসান ; শুনিলে তন্ময় । সেদিন ঐশ্বৰ্য তব উন্মেষিল নব নব অন্তরে উদবেলি হল আপনাতে আপন বিস্ময় । আপনি সন্ধান পেলে আপনার সৌন্দর্য উদার, আনন্দে ধরিলে হাতে জ্যোতির্ময় পাত্ৰটি সুধার বিশ্বের ক্ষুধার । সেদিন, উন্মত্ত তুমি, যে নৃত্যে ফিরিলে বনে বনে সে-নৃত্যের ছন্দে-লয়ে সংগীত রচিনু ক্ষণে ক্ষণে তব সঙ্গ ধরে । ললাটের চন্দ্ৰলোকে নন্দনের স্বপ্ন-চোখে নিত্য-নূতনের লীলা দেখেছিনু চিত্ত মোর ভরে । রূপ-তরঙ্গিমা । সেদিনের পানিপাত্র, আজ তার ঘুচালে পূর্ণতা ? মুছিলে চুম্বনরাগে-চিহ্নিত বঙ্কিম রেখা-লতা রক্তিম অঙ্কনে ? অগীত সংগীতধার, যা অশ্রচর সঞ্চয়তার অযত্নে লুষ্ঠিত সে কি ভগ্নভাণ্ডে তোমার অঙ্গনে ? তোমার তাণ্ডব নৃত্যে চূৰ্ণ চুৰ্ণ হয়েছে সে ধূলি ? নিঃস্ব কালবৈশাখীর নিশ্বাসে কি উঠিছে আকুলি লুপ্ত দিনগুলি ? নহে নহে, আছে তারা ; নিয়েছ তাদের সংহরিয়া নিগুঢ় ধ্যানের রাত্রে, নিঃশব্দের মাঝে সম্বরিয়া রাখা সংগোপনে । তোমার ললাটে চন্দ্র গুপ্ত আজি সুপ্তির বন্ধনে । আবার কী লীলাচ্ছলে অকিঞ্চন সেজেছ বাহিরে । অন্ধকারে নিঃস্বনিছে যত দূরে দিগন্তে চাহি রে— “নাহি রে, নাহি রে ।” কালের রাখাল তুমি, সন্ধ্যায় তোমার শিঙা বাজে, দিনধেনু ফিরে আসে স্তব্ধ তব গোষ্ঠগৃহমাঝে, উৎকণ্ঠিত বেগে । So a