পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হারুন-মারু জাহাজ ৭ অক্টোবর ১৯২8 জানি জানি, তুমি আমার চাও না পূজার মালা ওগো খেলার সাথি । এই জনহীন অঙ্গনেতে গন্ধপ্ৰদীপ জ্বালা, নয় আরতির বাতি । তোমার খেলায় আমার খেলা মিলিয়ে দেব। তবে নিশীথিনীর স্তব্ধ সভায় তারার মহােৎসবে, তোমার বীণার ধ্বনির সাথে আমার বাশির রাবে পূর্ণ হবে রাতি । তোমার আলোয় আমার আলো মিলিয়ে খেলা হবে, অপরিচিত। পথ বাকি আর নাই তো আমার, চলে এলাম। এক, তোমার সাথে কই হল গো দেখা ? কুয়াশাতে ঘন আকাশ, স্নান শীতের ক্ষণে ফুল ঝরাবার বাতাস বেড়ায় কঁপিন-লাগা বনে । সঙ্গিনীহীন পাখি যখন গান যাবে তার ভুলি, হয়তো তুমি আপন-মনে আসবে সোনার রথে শুকনো-পাতা ঝরা-ফুলের পথে । পুলক লেগেছিল মনে পথের নূতন বঁাকে হঠাৎ সেদিন কোন মধুরের ডাকে । দূরের থেকে ক্ষণে-ক্ষণে রঙের আভাস এসে গগন-কোণে চমক হেনে গেছে কোথায় ভেসে | মনের ভুলে ভেবেছিলাম তুমিই বুঝি এলে গন্ধরাজের গন্ধে তোমার গোপন মায়া মেলে হয়তো তুমি এসেছিলে, যায় নি আড়ালখানা, চোখের দেখায় হয় নি প্ৰাণের জানা । হয়তো সেদিন তোমার আঁখির ঘন তিমির ব্যেপে অশ্রুজিলের আবেশ গেছে কেঁপে । হয়তো আমায় দেখেছিলে বাকিয়ে বাকা ভুরু, বক্ষ তোমার করেছিল ক্ষণেক দুরু দুরু, সেদিন হতে স্বপ্ন তোমার ভোরের আধো-ঘুমে রঙিয়েছিল হয়তো ব্যথার রক্তিমকুন্ধুমে— আধেক-চাওয়ায় ভুলে-যাওয়ায় হয়েছে জাল বোনা তোমায় আমায় হয় নি জানাশোনা । S w (e.