পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাতক পলাতক ওই যেখানে শিরীষ গাছে ঘাসের 'পরে ছায়াখানি কঁপায় থারথার ঝরা ফুলের গন্ধে ভরভর— ওইখানে মোর পোষা হরিণ চরত আপন মনে হেনা-বেড়ার কোণে শীতের রোদে সারা সকাল বেলা | } তারই সঙ্গে করত খেলা পাহাড়-থেকে-আনা ঘন রাঙা রোয়ায় ঢাকা একটি কুকুর-ছান । মিলেছে এক পাঠশালাতে, একসাথে তাই বেড়ায় হেসে খেলে । হাটের দিনে পথের কত লোকে বেড়ার কাছে দাঁড়িয়ে যেত, দেখত অবাক-চোখে | ফাগুন মাসে জাগল পাগল দখিন হাওয়া, শিউরে ওঠে আকাশ যেন কোন প্রেমিকের রঙিন-চিঠি-পাওয়া । শালের বনে ফুলের মতন হল শুরু, পাতায় পাতায় ঘসে ঘাসে লািগল কঁপিন দুরুদুরু । হরিণ যে কার উদাস-করা বাণী হঠাৎ কখন শুনতে পেলে আমরা তা কি জানি । তাই যে কালো চোখের কোণে চাউনি তাহার উতল হল অকারণে ; তাই সে থেকে থেকে হঠাৎ আপনি ছায়া দেখে চমকে দাঁড়ায় বেঁকে । একদা এক বিকাল বেলায় । আমলকীবন অধীর যখন ঝিকিমিকি আলোর খেলায়, তপ্ত হাওয়া ব্যথিয়ে ওঠে আমের বোলের বাসে, মাঠের পরে মাঠ হয়ে পার ছুটিল হরিণ নিরুদেশের আশে। সম্মুখে তার জীবনমরণ সকল একাকার, অজানিতের ভয় কিছু নেই। আর । ,