পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N 88 অ্যান্ডেস জাহাজ ২১ অক্টোবর ১৯২৪ রবীন্দ্র-রচনাবলী বেঁধেছিল কোন জন্মে— দুঃখে সুখে নানা বর্ণে রাঙি তাহাদের রঙ্গমঞ্চ হঠাৎ পড়িল কবে ভাঙি অতৃপ্ত আশার ধূলিস্তুপে । আকার হারালো তারা, আবাস তাদের নাহি । খ্যাতিহারা সেই স্মৃতিহারা সৃষ্টিছাড়া ব্যৰ্থ ব্যথা প্ৰাণের নিভূত লীলাঘরে কোণে কোণে ঘোরে শুধু মূর্তি-তরে, আশ্রয়ের তরে । রাগে অনুরাগে যারা বিচিত্ৰ আছিল কত রূপে, আজ শূন্য দীর্ঘশ্বাস আঁধারে ফিরিছে চুপে চুপে । মুক্তি মুক্তি নানা মূর্তি ধরি দেখা দিতে আসে নানা জনে— এক পন্থা নহে । পরিপূর্ণতার সুধা নানা স্বাদে ভুবনে ভুবনে নানা স্রোতে বহে । সৃষ্টি মোর সৃষ্টি-সাথে মেলে যেথা, সেথা পাই ছাড়া, মুক্তি যে আমারে তাই সংগীতের মাঝে দেয় সাড়া, সেথা আমি খেলা-খ্যাপা বালকের মতো লক্ষ্মীছাড়া লক্ষ্যহীন নগ্ন নিরুদেশ । সেথা মোর চির নব, সেথা মোর চিরন্তন শেষ । মাঝে মাঝে গানে মোর সুর আসে যে সুরে, হে গুণী, তোমারে চিনায় । বেঁধে দিয়ে নিজহাতে সেই নিত্য সুরের ফাঙ্গুনী আমার বীণায় । তা হলে বুঝিব আমি ধূলি কোন ছন্দে হয় ফুল নব নব মায়াচ্ছায়া কোন নৃত্যে নিয়ত দোদুল বর্ণ বৰ্ণ ঋতুর দোলায় । রি আপনি সুর কোন তালে তোমারে ভোলায় । যেদিন আমার গান মিলে যাবে তোমার গানের মুক্তির সংগমতীৰ্থ পাব আমি আমারি প্রাণের আপন সংগীতে । সেদিন বুঝিব মনে নাই নাই বস্তুর বন্ধন, শূন্যে শূন্যে রূপ ধরে তোমারই এ বীণার স্পন্দন— নেমে যাবে সব বোঝা, থেমে যাবে সকল ক্ৰন্দন,