পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী প্ৰকাশ খুঁজতে যখন এলাম সেদিন কোথায় তোমার গোপন অশ্রািজল, সে পথ আমায় দাও নি তুমি বলে । । বাহির-দ্বারে অধীর খেলা, ভিড়ের মাঝে হাসির কোলাহল, দেখে এলেম চলে । এই ছবি মোর ছিল মনেনির্জনমন্দিরের কোণে দিনের অবসানে সন্ধ্যাপ্ৰদীপ আছে। চেয়ে ধ্যানের চোখে সন্ধ্যাতরার পানে । নিভৃত ঘর কাহার লাগি নিশীথ-রাতে রইল জাগি, খুলল না তার দ্বার । হে চঞ্চলা, তুমি বুঝি আপনিও পথ পাও নি খুঁজি, তোমার কাছে সে ঘর অন্ধকার । জানি তোমার নিকুঞ্জে আজ পলাশ-শাখায় রঙের নেশা লাগে, আপন গন্ধে বকুল মাতোয়ারা । কাঙালি সুরে দখিন বাতাস বনে বনে গুপ্ত কী ধন মাগে, বেড়ায় নিদ্রাহারা । হায় গো তুমি জান না যে তোমার মনের তীর্থমাঝে পূজা হয় নি আজও । দেবতা তোমার বুভুক্ষিত, মিথ্যা-ভূষায় কী সাজ তুমি সাজো । কণ্ঠহারের মানিক গাথা, হয় নি কেবল চোখের জলে লুটিয়ে মাথা ধুলার তলে আপন-ভোলা সকল-শেষের দান । ভোলাও যখন তখন সে কোন মায়ার ঢাকা পড়ে তোমার পরে ভুলবে যখন তখন প্ৰকাশ পাবে ; উষার মতো অমল হাসি জাগবে তোমার আঁখির নীলাম্বরে গভীর অনুভাবে । ভোগ সে নহে, নয় বাসনা, নয় আপনার উপাসনা, নয়কো অভিমানসরল প্রেমের সহজ প্ৰকাশ, বাইরে যে তার নাই রে পরিমাণ । SGS