পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাতক তখন তাদের আরম্ভ হয় নব নব কাহিনী-জাল বোনা দুঃখে সুখে দিন মুহুর্ত গোনা । একে একে তিনটি মেয়ের পরে শৈল যখন জন্মাল তার বাপের ঘরে, জননী তার লজ্জা পেল ; ভাবল কোথা থেকে বিনা-দোষের অপরাধে শৈলবালার জীবন হল শুরু, পদে পদে অপরাধের বোঝা হল গুরু । কারণ বিনা যে-অনাদর আপনি ওঠে। জেগে৷ বেড়েই চলে সে যে আপন বেগে । মা তারে কয় “পোড়ারমুখী’, শাসন করে বাপ— এ কোন অভিশাপ হতভাগী আনলি বয়ে— শুধু কেবল বেঁচে-থাকার পাপ । যতই তারা দিত ওরে গালি নির্মলারে দেখত মলিন মাখিয়ে তারে আপনি কথার কালি । নিজের মনের বিকারটিারেই শৈল ওরা কয়, ওদের শৈল বিধির শৈল নয় । ‘দাদা’ বলে গলা আমার জড়িয়ে ধরে বসত আমার কোলে । নাম শুধালে শৈল আমায় বলত হাসি হাসি “আমার নাম যে দুষ্ট, সর্বনাশী !” যখন তারে শুধাতেম তার মুখটি তুলে ধরে ‘আমি কে তোর বল দেখি ভাই মোরে ? বলত ‘দাদা, তুই যে আমার বর !”— এমনি করে হাসাহসি হত পরস্পর । বিয়ের বয়স হল তবু কোনোমতে হয় না বিয়ে তার—— তাহে বাড়ায় অপরাধের ভার । অবশেষে বৰ্মা থেকে পাত্ৰ গেল জুটি । শুভকর্ম সেরে তাড়াতাড়ি মেয়েটিরে সঙ্গে নিয়ে রেঙ্গুনে তার দিতে হবে পাড়ি । শৈলকে যেই বলতে গেলেম হেসে‘বুড়ো বরকে হেলা করে নবীনকে, ভাই, বরণ করলি শেষে ?” অমনি যে তার দু-চোখ গেল ভেসে