পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

68 অ্যান্ডেস জাহাজ দোসর আমার, দোসর ওগো, যে বাতাসে বসন্তু তার পুলক জাগায় ঘাসে ঘাসে, ফুল-ফোটানো তোমার লিপি সেই কি আনে । গুঞ্জরিয়া মমরিয়া কী বলে যায় কানে কানে, কে যেন তা বোঝে আমার বক্ষতলে, ভাসে নয়ন অশ্রািজলে । দোসর ওগো, দোসর আমার, কোন সুদূরে । ঘরছাড়া মোর ভাবনা-বাউল বেড়ায় ঘুরে । তারে যখন শুধাই, সে তো কয় না কথা, নিয়ে আসে স্তব্ধ গভীর নীলাম্বরের নীরবতা । একতারা তার বাজায় কভু গুনগুনিয়ে, - রাত কেটে যায়। তাই শুনিয়ে । দোসর ওগো, দোসর আমার, উঠিল। হাওয়াএবার তবে হােক আমাদের তরী বাওয়া । দিনে দিনে পূর্ণ হল ব্যথার বোঝা, তীরে তীরে ভাঙন লাগে, মিথ্যে কিসের বাসা খোজা । একে একে সকল রশি গেছে খুলে, ভাসিয়ে এবার দাও অকুলে । দোসর ওগো, দোসর আমার, দাও-না দেখাসময় হল, একার সাথে মিলুক একা । । অনেক দিনের দূরের ডাকা পূৰ্ণ করো কাছের খেলায় তোমায় আমায় নতুন পালা হােক-না এবার হাতে হাতে দেবার নেবার । ২৮ অক্টোবর ১৯২৪ অবসান আজি আমার প্রাণের উপকূলে । মনের মাঝে কে কয় ফিরে ফিরেবাশির সুরে ভরিয়া দাও গোধূলি-আলোটিরে । সঁাঝের হাওয়া করুণ হােক দিনের অবসানে পাড়ি দেবার গানে । সময় যদি এসেছে। তবে সময় যেন পাই, নিভৃত খনে আপন-মনে গাই ।