পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> abr রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী চাহে নি সে অরণ্যের পানে, লতার লাবণ্য নাহি জানে, পড়ে নি ফুলের বর্ণে বসন্তের মর্মবাণী লেখা । মধুকণা লক্ষ্য তার, তারি। কক্ষ আছে শুধু শেখা ! পাখির মতন মন শুধু উড়িবার সুখ চাহে উধাও উৎসাহে ; আকাশের বক্ষ হতে ডানা ভরি তার স্বর্ণ-আলোকের মধু নিতে চায়, নাহি যার ভার, নাহি যার নিরুদ্ধ সঞ্চয়, যার বাধা নাই, যারে পাই তবু নাহি পাই— যার তরে নহে লোভ, নহে ক্ষোভ, নহে তীক্ষ রিষ, নহে শূল, নহে গুপ্ত বিষ । বুয়েনোস এয়ারিস ৪ ডিসেম্বর ১৯২৪ তৃতীয়া কাছের থেকে দেয় না। ধরা, দূরের থেকে ডাকে তিন বছরের প্ৰিয়া আমার— দুঃখ জানাই কাকে । কণ্ঠেতে ওর দিয়ে গেছে দখিন-হাওয়ার দান তবু কেন আমারে ওর এতই কৃপণতা— বারেক ডেকে দৌড়ে পালায়, কইতে না চায় কথা । আমন সুরে ডাকে আমার মানিক, আমার আলো । কপাল মন্দ হলে টানে আরো নীচের তলায়— হৃদয়টি ওর হােক-না কঠোর, মিষ্টি তো। ওর গলায় । আলো যেমন চমকে বেড়ায় আমলকীর ওই গাছে, তিন বছরের প্ৰিয়া আমার দূরের থেকে নাচে । লুকিয়ে কখন বিলিয়ে গেছে বনের হিল্লোল অঙ্গে উহার বেণুশাখার তিন ফাগুনের দোল । শেষ না হতেই নাচের পালা কোনখানে দেয় ছুটি । আমি ভাবি এই বা কী কম, প্ৰাণে তো ঢেউ তোলে— ওর মনেতে যা হয় তা হোক, আমার তো মন দোলে । হৃদয় নাহয় নাই বা পেলাম, মাধুরী পাই নাচে