পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭ ডিসেম্বর ১৯২৪ চাপ ৬ মালাল লঙিঘয়া চলিয়া গেছে চিরসুন্দরের সুরপুরে । চিরকাল-তরে সে কি থেমে যাবে শেষে কঙ্কালের সীমানায় এসে । যে আমার সত্য পরিচয় ংসে তার পরিমাপ নয় ; পদাঘাতে জীর্ণ তারে নাহি করে দণ্ডপলগুলি সর্বস্বাস্ত নাহি করে পথপ্ৰান্তে ধূলি । আমি যে রূপের পদ্মে করেছি। অরূপমধু পান, দুঃখের বক্ষের মাঝে আনন্দের পেয়েছি সন্ধান, অনন্ত মীেনের বাণী শুনেছি। অন্তরে, দেখেছি জ্যোতির পথ শূন্যময় আঁধারপ্রাস্তরে } নহি আমি বিধির বৃহৎ পরিহাস, অসীম ঐশ্বর্য দিয়ে রচিত মহৎ সর্বনাশ । শ্ৰীমান দিনেন্দ্ৰনাথ ঠাকুর কল্যাণীয়েষ্ণু, দূর প্রবাসে সন্ধ্যাবেলায় বাসায় ফিরে এনু, হঠাৎ যেন বাজল কোথায় ফুলের বুকের বেণু । আঁতি-পাতি খুঁজে শেষে বুঝি ব্যাপারখানা, বাগানে সেই জুই ফুটেছে চিরদিনের জানা । গন্ধটি তার পুরোপুরি বাংলাদেশের বাণী, একটুও তো দেয় না আভাস এই দেশী ইস্পানি । প্রকাশ্যে তার থাক-না যতই সাদা মুখের ঢঙে, কোমলতায় লুকিয়ে রাখে শ্যামল বুকের রঙ । হেথায় মুখর ফুলের হাটে আছে কি তার দাম । চারুকণ্ঠে ঠাই নাহি তার ধুলায় পরিণাম । যুখী বলে, “আতিথ্য লও, একটুখানি বোসো ।” জিতবে গন্ধ হারবে কি গান ? নৈব কদাচিৎ ৷” তাড়াতাডি গান রচিলাম ; জানি নে কার জিত। তিনটে সাগর পাড়ি দিয়ে একদা এই গান অবশেষে বোলপুরে সে হবে বিদ্যমান । এই বিরহীর কথা স্মরি গেয়ে সেদিন, দিনু, জুইবাগানের আরেক দিনের গান যা রচেছিনু ।