পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ο δυ Νο রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী বণিকের পণ্যযান হে তুমি রাজার জয়রথ, আমি চলিবার পথ, সেই আমি ভুলিবার পথ, তীব্রাদুঃখ মহাদম্ভ চিহ্ন মুছে গিয়েছে সবাই— কিছু নাই, নাই । কীভূ সুখে কভু দুঃখে নিয়ে চলি ; সুদিন দুর্দিন নাহি বুঝি আমি উদাসীন । বার বার কচি ঘাস কোথা হতে আসে মোর কোলে, চলে যায়— সেও যায় যে যায় তাহারে দ’লে দ’লে ; কিছু নাহি রায় । বসিতে না চাহে কেহ, কাহারো কিছু না সহে দেরি— কারো নই, তাই সকলেরই | বামে মোর শস্যক্ষেত্র, দক্ষিণে আমার লোকালয়— প্ৰাণ সেথা দুই হস্তে বর্তমান আঁকড়িয়া রায় । আমি সর্ববন্ধহীন নিত্য চলি তারি মধ্যখানে ভবিষ্যের পানে । আমারে ভুলিবে বলে যাত্রীদল গান গাহে সুরে— পারি। নে রাখিতে তাহা, সে গান চলিয়া যায় দূরে । বসন্ত আমার বুকে আসে যাবে ধুলায় আকুল নাহি দেয় ফুল । পৌছিয়া ক্ষতির প্রান্তে বিত্তহীন একদিন শেষে শয্যা পাতে মাের পাশে এসে । পাস্থের পাথেয় হতে খসে পড়ে যাহা ভাঙাচোরা ধূলিরে বঞ্চনা করি কড়িয়া তুলিয়া লয় ওরা ; আমি রিক্ত, ওরা রিক্ত, মোর ”পরে নাই প্রীতিলেশ মোরে করে দ্বেষ । শুধু শিশু বোঝে মোরে, আমারে সে জানে ছুটি ব’লে— ঘর ছেড়ে আসে তাই চলে । নিষেধ বা অনুমতি মোর মাঝে না দেয় পাহারা, বিধাতার মতো শিশু লীলা দিয়ে শূন্য দেয় ভরে— শিশু বোঝে মোরে ।