পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SR88 রবীন্দ্র-রচনাবলী রাজা । সে কী কথা ! সঞ্জীব । আয়তনে একজটা দেবীর শাপ লেগেছে । রাজা। একজটা দেবীর শাপ ! সর্বনাশ ! কেন তার শাপ ? মহাপঞ্চক । যে উত্তর দিকে তার অধিষ্ঠান। এখানে একদিন সেই দিককার জানালা খোলা হয়েছে। রাজা । (বসিয়া পড়িয়া) তবে তো আর আশা নেই। মহাপঞ্চক । আচার্য অদীনপুণ্য এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে দিচ্ছেন না । বিশ্বম্ভর । তিনি জোর করে আমাদের ঠেকিয়ে রেখেছেন । রাজা । দাও, দাও, অদীনপুণ্যকে এখনই নির্বাসিত করে দাও ! মহাপঞ্চক । আগামী অমাবস্যায়— রাজা । না না, এখন তিথিনক্ষত্ৰ দেখবার সময় নেই। বিপদ আসন্ন | সংকটের সময় আমি আমার রাজ-অধিকার খাটাতে পারি- শাস্ত্রে তার বিধান আছে । মহাপঞ্চক । ই আছে। কিন্তু আচার্য কে হবে ? রাজা । তুমি, তুমি। এখনই আমি তোমাকে আচার্যের পদে প্রতিষ্ঠিত করে দিলুম। দিকপালগণ সাক্ষী, এই ব্ৰহ্মচারীগণ সাক্ষী । মহাপঞ্চক । অদীনপুণ্যকে কোথায় নির্বাসিত করতে চান ? রাজা । আয়তনের বাইরে নয়। কী জানি যদি যুনিকদের সঙ্গে যোগ দেন। আয়তনের প্রান্তে যে দর্ভকপাড়া আছে সেইখানে তাকে বন্ধ করে রেখো । জয়োত্তম । আচার্য অদীনপুণ্যকে দর্ভকদের পাড়ায় ! তারা যে অন্ত্যজজাতি— অশুচি পতিত ! মহাপঞ্চক । যিনি স্পর্ধাপূর্বক আচার লঙ্ঘন করেন, অনাচারীদের মধ্যে নির্বািসনই তার উচিত দণ্ড । মনে কোরো না আমার ভাই বলে পঞ্চককে ক্ষমা করব । তারও সেই দৰ্ভকপাড়ায় গতি । দূতের প্রবেশ দূত । শুনলুম গুরু খুব কাছে এসেছেন । রাজা । কে বললে ? দূত । চারি দিকেই কথা উঠেছে। রাজা । তা হলে তো তার অভ্যর্থনার আয়োজন করতে হবে । মহাপঞ্চক, অচলায়তনের সমস্ত জানলা বন্ধ করে শুদ্ধিমন্ত্র পাঠ করাতে থাকো । মহাপঞ্চক | জানলা বন্ধ সম্বন্ধে ভাববেন না । মস্ত্রের ভার আমি নিচ্ছি। পঞ্চক কোথায় ? [রাজার প্রস্থান জয়োত্তম । শুনলুম সে প্রাচীর ডিঙিয়ে যুনিকদের কাছে গেছে। মহাপঞ্চক ৷ পাষণ্ড ! আর যেন সে আয়তনে ফিরে না আসে। গুরু আসবার আগেই এখানকার সমস্ত উপদ্রব দূর করা চাই ] ওহে ব্ৰহ্মচারীগণ, মন্ত্র পড়বার জন্যে স্নান করে প্রস্তুত হয়ে এসো | ܔ পাহাড় মাঠ পঞ্চকের গান এ পথ গেছে কোনখানে গো কোনখানে— Of God EFG O (F EssCA কোন পাহাড়ের পারে, কোন সাগরের ধারে, কোন দুরাশার দিকপানে— তা কে জানে তা কে জানে ।