পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরপরতন Abr) প্রতিহারীর প্রবেশ প্রতিহাৱী । কী রাজকুমারী ? সুদৰ্শন। ঐ যে আম্রবনবীথিকায় উৎসববালকেরা গান গেয়ে যাচ্ছে, ডাক ডাক, ওদের ডেকে নিয়ে আয় । একটু গান শুনি | [প্ৰতিহারীর প্রস্থান বালকগণের প্রবেশ । এসো এসে সব মূর্তিমােন কিশোর বসন্ত, ধরে তোমাদের গান। আমার সমস্ত দেহমান গান গাইছে, কণ্ঠে আসছে না | আমার হয়ে তোমরা গাওঁ । বালকগণের গান কার হাতে এই মালা তোমার পাঠালে আজ ফাগুন দিনের সকালে । তার বর্ণে তোমার নামের রেখা, গন্ধে তোমার ছন্দ লেখা, সেই মালাটি বেঁধেছি। মোর কপালে আজ ফাগুনদিনের সকালে ৷ গানটি তোমার চলে এল আকাশে আজ ফাগুন দিনের বাতাসে । ওগো আমার নামটি তোমার সুরে কেমন করে দিলে জুড়ে, লুকিয়ে তুমি ওই গানের আড়ালে, আজ ফাগুন দিনের সকালে ৷ -- সুদৰ্শন । হয়েছে, হয়েছে, আর না । তোমাদের এই গান শুনে চোখে, জল ভরে আসছে- আমার মনে হচ্ছে যা পাবার জিনিস তাকে হাতে পাবার জো নেই- তাকে হাতে পাবার দরকার নেই | [প্ৰণাম করিয়া বালকগণের প্রস্থান কুঞ্জম্বার ঠাকুরদা ও দেশী পথিকদের প্রবেশ ঠাকুরদা। কী ভাই, হল তোমাদের ? কৌণ্ডিল্য। খুব হল ঠাকুরদা। এই দেখে-না একেবারে লালে। লাল করে দিয়েছে । কেউ বাকি ନାହିଁ । ঠাকুরদা। বলিস কী ? রাজাগুলোকে সৃদ্ধ রাঙিয়েছে না কি ? জনাৰ্দন । ওরে বাস রে । কাছে ঘেষে কে ! তারা সব বেড়ার মধ্যে খাড়া হয়ে রইল । ঠাকুরদা। হায় হায়, বড়ো ফাঁকিতে পড়েছে। একটুও রঙ ধরাতে পারলি নে ? জোর করে ঢুকে পড়তে হয় । কুম্ভ । ও দাদা, তাদের রাঙা, সে আর-এক রঙের । তাদের চক্ষু রাঙা, তাদের পাইকগুলোর পাগড়ি রাঙা, তার উপরে খোলা তলোয়ারের যে রকম দেখলুম একটু কাছে ঘেঁষলেই একেবারে চরম রাঙা রাঙিয়ে দিত । ঠাকুরদা। বেশ করেছিস ঘোষিস নি। পৃথিবীতে ওদের নির্বািসনদণ্ড— ওদের তফাতে রেখে চলতেই হবে ।