পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Rbr রবীন্দ্র-রচনাবলী ঘরেতে নেই মঞ্জলিকা। খবর পেলেন চিঠি পড়ে, গেছে দোহে ফারাক্কাবাদ চলে, সেইখানেতেই ঘর পাতবে বলে । আগুন হয়ে বাপ বারে বারে দিলেন অভিশাপ । মালা আমি যেদিন সভায় গেলেম প্ৰাতে, সিংহাসনে রানীর হাতে ছিল সোনার থালা, তারই পরে একটি শুধু ছিল মণির মালা । কাশী কাঞ্চী কানোজ কোশল অঙ্গ বঙ্গ মদ্র মগধ হতে বহুমুখী জনধারার স্রোতে দলে দলে যাত্রী আসে ব্যগ্র কলোচ্ছাসে । যারে শুধাই “কোথায় যাবে ?” সে-ই তখনি বলে “রানীর সভাতলে ।” যারে শুধাই “কোন যাবে ?” কয় সে তেজে চক্ষে দীপ্ত জ্বালা “ নেব বিজয়মালা ।” । কেউ বা ঘোড়ায়, কেউ বা রথে ছুটে চলে, বিরাম চায় না পথে । মনে যেন আগুন উঠল খেপে, চঞ্চলিত বীণার তারে যৌবন মোর উঠল। কেঁপে কেঁপে ] মনে মনে কইনু হর্ষে, “ওগো জ্যোতির্ময়ী, তোমার সভায় হব আমি জয়ী । শূন্য ক’রে থালা । নেব বিজয়মালা ।” একটি ছিল তরুণ যাত্রী, করুণ তাহার মুখ, প্রভাত-তারার মতো যে তার নয়নদুটি কী লাগি উৎসুক । আকাশ যেন শুধায় তাকেযার কথা সে ভাবে কী তার নাম । আমি তারে যখন শুধালাম- , “মালার আশায় যাও বুঝি ওই হাতে নিয়ে শূন্য তোমার ডালা ?” সে বলে, “ভাই, চাই নে বিজয়মালা ।”