পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8) R রবীন্দ্র-রচনাবলী চতুর্থ অধ্যায় “আবার অখিল !— পালিয়েছিস বোর্ডিং থেকে ! তোর সঙ্গে কোনোমতে পারবার জো নেই। বাৱ বার বলছি, এ বাড়িতে খবরদার আসিস নে । মরবি যে ” অখিল কোনো উত্তর না দিয়ে গলার সুর নামিয়ে বললে, “একজন দাড়িওআলা কে পিছনের পাচিল টপকিয়ে বাগানে ঢুকল। তাই তোমার এ ঘরে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলুম।— ঐ শোনো পায়ের শব্দ ।” অখিল তার ছুরির সব-চেয়ে মোটা ফলাটা খুলে দাঁড়াল । এলাকালে "চুরি খুলতে হবে না তোমাকে, বীরপুরুষ। দে বলছি।” ওর হাত থেকে ছুরি কেড়ে সিঁড়ি থেকে আওয়াজ এল, “ভয় নেই, আমি অস্তু।” মুহুর্তে এলার মুখ পাংশুবৰ্ণ হয়ে এল— বললে, “দে দরজা খুলে ।” দরজা খুলে দিয়ে অখিল জিজ্ঞাসা করলে, “সেই দাড়িওআলা কোথায় ?” “দাড়ি নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে বাগানে, বাকি মানুষটাকে পাবে এইখানেই । যাও খোজ করো গে দাড়ির ।” অখিল চলে গেল । এলা পাথরের মূর্তির মতো ক্ষণকাল একদৃষ্টি চেয়ে দাঁড়িয়ে রইল। বললে, “অন্তু, এ কী চেহারা তোমার ?” उाऊँीन दलाल, ‘भानाश्त नाश ।” “তবে কি সত্যি ?” “কী সত্যি ?” “তোমাকে সর্বনেশে ব্যামোয় ধরেছে।” “নানা ডাক্তারের নানা মত, বিশ্বাস না করলেও চলে ।” “নিশ্চয় তোমার খাওয়া হয় নি ?” “ও-কথাটা থােক। সময় নষ্ট কোরো না।” “কেন এলে, অন্তু, কেন এলে ? এরা যে তোমাকে ধরবার অপেক্ষায় আছে ।” “ওদের নিরাশ করতে চাই নে ৷” কৃষ্ঠােনর হাত চেপে ধরে এলা কালে, "কেন এলে এই পশ্চিত বিপদের মধ্যে। এনে উপদ p' “কেন এলুম। সেই কথাটা যাবার ঠিক আগেই বলে চলে যাব। ইতিমধ্যে যতক্ষণ পারি ঐ কথাটাই ভুলে থাকতে চাই। নীচের দরজাগুলো বন্ধ করে দিয়ে আসি গে।” খানিক পরে উপরে এসে বললে, “চলো ছাদে। নীচের তলাকার আলোর বালবগুলো সব খুলে निशछि । उश (ocशा ना |” দুজনে ছাদে এসে ছাদে প্রবেশের দরজা বন্ধ করে দিলে। বন্ধ দরজায় ঠেসান দিয়ে বসল। অতীন, এলা বসল। তার সামনে । “এলা, মন সহজ করো। যেন কিছু হয় নি, যেন আমরা দুজনে আছিলঙ্কাকাণ্ড আরম্ভ হবার আগে সুন্দরকাণ্ডে । তোমার হাত অমান বরফের মতো ঠাণ্ডা কেন ? কঁপিছে যে | দাও গরম করে দিই।" এলার হাত দুখানি নিয়ে অতীন জামার নীচে বুকের উপর চেপে রাখলে। তখন দূরের পাড়ায় বিয়েবাড়িতে সানাই বাজছে। “ভয় করছে, এলী ?” “কিসের ভয় ?” “সমস্ত কিছুর। প্রত্যেক মুহুর্তের।” “ভয় তোমার জন্যে অন্তু, আর কিছুর জন্যে নয় ।”