পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

外g@瓦 8ᏔᏬᏔᎾ ইন্দ্ৰকুমার বলিলেন, “তাই সেটা পুরাতন হইয়া গেছে।” চন্দ্রনারায়ণ বিমর্ষ হইয়া বলিলেন, “তুমি আমার কথা এমন করিয়া ভুল বুঝিলে বড়ো ব্যথা লাগে ।” ইন্দ্ৰকুমার হাসিয়া তাড়াতাড়ি বলিলেন, “না দাদা, আমি ঠাট্টা করিতেছিলাম। শিকারে যাইব না তো কী। চলো তার আয়োজন করি গে৷ ” ইশা খা মনে মনে কহিলেন, “ইন্দ্ৰকুমার বুকে দশটা বাণ সহিতে পারে, কিন্তু দাদার একটু সামান্য অনাদর সহিতে পারে না ।” চতুর্থ পরিচ্ছেদ শিকারের বন্দােবস্ত সমস্ত স্থির হইলে পরে রাজধর আস্তে আস্তে ইন্দ্ৰকুমারের স্ত্রী কমলাদেবীর কক্ষে গিয়া উপস্থিত । কমলদেবী হাসিয়া বলিলেন, “এ কী ঠাকুরপো । একেবারে তীরন্ধনুক বৰ্মচর্ম লইয়া যে । আমাকে মারিবে নাকি ৷” রাজধর বলিলেন, “ঠাকুরানী, আমরা আজ তিন ভাই শিকার করিতে যাইব, তাই এই বেশ ।” কমলদেবী আশ্চর্য হইয়া কহিলেন, “তিন ভাই ! তুমিও যাইবে না কি ! আজি তিন ভাই একত্র হইবে । এ তো ভালো লক্ষণ নয় । এ যে ত্র্যহস্পর্শ হইল।” যেন বড়ো ঠাট্ট হইল। এই ভাবে রাজধর হা হা করিয়া হাসিলেন, কিন্তু বিশেষ কিছু বলিলেন না । কমলদেবী কহিলেন, “না না, তাহা হইবে না- রোজ রোজ শিকার করিতে যাইবেন আর আমি ঘরে বসিয়া ভাবিয়া মারি ।” রাজধর বলিলেন, “আজ আবার রাত্রে শিকার ।” কমলদেবী মাথা নাডিয়া বলিলেন, “সে কখনোই হইবে না । দেখিব আজ কেমন করিয়া যান ।” রাজধর বলিলেন, “ঠাকুরানী, এক কাজ করো, ধনুকবাণগুলি লুকাইয়া রাখো ।” কমলদেবী কহিলেন, “কোথায় লুকাইব ।” রাজধর । আমার কাছে দাও, আমি লুকাইয়া রাখিব । কমলা দেবী হাসিয়া কহিলেন, “মন্দ কথা নয়, সে বড়ো রঙ্গ হইবে।” কিন্তু মনে মনে বলিলেন, ‘তোমার একটা কী মতলব আছে। তুমি যে কেবল আমার উপকার করিতে আসিয়াছ তাহা বোধ হয় N. " “এসো, অস্ত্রশালায় এসো” বলিয়া কমলা দেবী রাজধারকে সঙ্গে করিয়া লইয়া গেলেন । চাবি লইয়া ইন্দ্রকুমারের অস্ত্রশালার দ্বার খুলিয়া দিলেন। রাজধর যেমন ভিতরে প্রবেশ করিলেন অমনি কমলা দেবী দ্বারে তালা লাগাইয়া দিলেন, রাজধর ঘরের মধ্যে বন্ধ হইয়া রহিলেন । কমলা দেবী বাহির হইতে হাসিয়া বলিলেন, “ঠাকুরপো, আমি তবে আজ আসি।” এ দিকে সন্ধ্যার সময় ইন্দ্ৰকুমার অন্তঃপুরে আসিয়া অস্ত্রশালার চাবি কোথাও খুঁজিয়া পাইতেছেন না। কমলদেবী হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “হাগা, আমাকে খুজিতেছি বুঝি, আমি তো হারাই নাই।” শিকারের সময় বহিয়া যায় দেখিয়া ইন্দ্ৰকুমার দ্বিগুণ ব্যস্ত হইয়া খোজ করিতে লাগিলেন। কমলদেবী তীহাকে বাধা দিয়া আবার তাহার মুখের কাছে গিয়া দাঁড়াইলেন— হাসিতে হাসিতে বুলিলেন, "হাগা, দেখিতে কি পাও না। চােখের সম্মুখে তবু ঘরময় বেড়াইতেছ।” ইন্দ্ৰকুমার কিঞ্চিৎ কাতরস্বরে কহিলেন, “দেবী, এখন বাধা দিয়ে না- আমার একটা বড়ো আবশ্যকের জিনিস হারাইয়াছে।” কমলদেবী কহিলেন, “আমি জানি তোমার কী হারাইয়াছে। আমার একটা কথা যদি রাখি তো খুঁজিয়া দিতে পারি।” ভুঞ্জ বুললেন, তবে শোনে। আর ঘূর্ণ শিকার করতে যাইতে পারবে না। এই লও (NES ן"