बिउँझ घृछ রমা do রমা। তবু ঐ কথা। এ বিদেশে তো কোন আয়োজনই করতে পারি নি। রমেশ । আয়োজনের কথা কে ভাবচে ? ভাবচি শুধু যত্নের কথাটুকু। এ আমি কোথায় পেতাম ? রমা । ( সলজে ) কেন, আপনার যত্ন করবার লোকের কি অভাব আছে না কি ? রমেশ । কোথায় পাব বল ত ? ছেলে বেলায় মা মারা গেছেন, তার পরে জ্যাঠাইমার হাত থেকে গিয়ে পোড়লাম বহুদূরে মামার বাড়ীতে। স্বামীম বেঁচে নেই, সমস্ত বাড়াটাই যেন হোটেল । সেখান থেকে পড়তে গেলাম এলাহাবাদে—সেও হোটেল। তারপরে গেলাম ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজে। সেখানে বহুকাল কাটুল, কিন্তু ছেলেবেলার সেই হোটেলবাসের দুঃখ আর ঘুচল না । খেতে হয় খাও—বাধা দেবারও শত্র নেই, এগিয়ে দেবারও মিত্র নেই। রম নীরব রমেশ। শরীর অমুস্থ, সাধ মিটিয়ে আজ খেতে পারলাম না, তবু মনে হচ্চে যেন জীবনের এই প্রথম স্বপ্রভাত, এ জীবনের সমস্ত ধারাটা যেন এই একটা বেলার মধ্যেই একেবারে বদলে গেল । রম । ( অধোমুখে ) কি সমস্ত বাড়িয়ে বলছেন বলুন ত ? রমেশ। বাড়ানোর শক্তি থাকূলে বাড়াতাম, কিন্তু সে সাধ্য নেই। রম। ভাগ্যে নেই, নইলে এর বেশি শক্তি থাকৃলে আমাকে ছুটে পালাতে কতো । আমারও ভাগ্য ভাল যে ঘরে ফিরে গিয়ে নিনো করবেন না, ব'লে বেড়াবেন না যে ওদের রমা এমনি যে আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পেট ভরে দুটো থেতেও দেয় নি। রমেশ । না, রাণী, নিন্দে করব না, মুখ্যাতি করেও বেড়াব না ।
পাতা:রমা-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৮
অবয়ব