বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজকাহিনী


মেঘের কড়মড়ি, ক্রমে যেন দূর হতে বহুদূরে সরে গেল। সুভাগার মনে আর কোনো শোক নাই, কোনো দুঃখ নাই। তাঁর মনের অন্ধকার যেন সূর্য্যের তেজে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। সুভাগা ধীরে ধীরে, ভয়ে ভয়ে, বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের কাছে শেখা সেই সূর্য্যমন্ত্র উচ্চারণ করলেন; তখন সমস্ত পৃথিবী যেন জেগে উঠল, সুভাগা যেন শুনতে পেলেন, চারিদিকে পাখীর গান, বাঁশীর তান, আনন্দের কোলাহল। তারপর গুরু গুরু গভীর গর্জ্জনে সমস্ত আকাশ কাঁপিয়ে, চারিদিক আলোয় আলোময় করে, সেই মন্দিরের পাথরের দেওয়াল, লোহার দরজা, যেন আগুনে আগুনে গলিয়ে দিয়ে, সাতটা সবুজ ঘোড়ার পিঠে আলোর রথে কোটি কোটি আগুনের সমান জ্যোতির্ম্ময় আলোময় সূর্য্যদেব দর্শন দিলেন। সে আলো, সে জ্যোতি মানুষের চোখে সহ্য হয় না। সুভাগা দুই হাতে মুখ ঢেকে বল্লেন, “হে দেব, রক্ষা কর, ক্ষমা কর, সমস্ত পৃথিবী জ্বলে যায়।” সূর্য্যদেব বল্লেন,— “ভয় নাই, ভয় নাই। বৎসে, বর প্রার্থনা কর।” বলতে বলতে সূর্য্যদেবের আলো ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে এল, শুধু একটুখানি রাঙা আভা সধবার সিদুরের মত সুভাগার সিঁথি আলো করে -