মালা, গায়ে বাঘছালের অঙ্গরাখা, পিঠে একটা কোরে প্রকাণ্ড ঢাল! তাদের আসবাবের মধ্যে এক ঘোড়া, এক কম্বল, এক লোটা, পৃথিবীতে আপনার বলবার আর কিছুই ছিল না। তারা দেবতার মধ্যে একমাত্র একলিঙ্গজির উপাসনা করত, মানুষের মধ্যে কেবলমাত্র মহারাণার হুকুম মানত। সমরসিংহ এই ফৌজের সৃষ্টিকর্ত্তা। ছোটখাট যুদ্ধে এদের কেউ দেখতে পেতনা, কেবল মাঝে মাঝে ঘোর দুর্দ্দিনে, যখন চারিদিকে শত্রু, চারিদিকে বিপদ ঘনিয়ে আসত, যখন বিধর্ম্মীর হাতে অপমান হবার ভয়ে দেশের যত সুন্দরী—কি কুমারী, কি বিধবা, কি দশ বছরের কচিমেয়ে, কি ষোলো বছরের পূর্ণ যুবতী—চিতার আগুনে রূপযৌবন ছাই করে দিয়ে চিতোরেশ্বরীর সম্মুখে জীবনের শেষ ব্রত জহর–ব্রত উদযাপন করত, যখন আর কোনো আশা, কোনো উপায় নেই, সেই সময়, হতাশ রাজপুতের শেষ উৎসাহের মত দুর্দ্ধর্ষ, দুর্দ্দান্ত এই দেওয়ানী ফৌজ চিতোরের কেল্লায় দেখা দিত! সত্তর বৎসর পূর্ব্বে সমরসিংহের বিধবা রাণী কর্ম্মদেবী একদিন কুতুবুদ্দিনের হাত থেকে ছেলের রাজসিংহাসন রক্ষা করবার জন্য মেবারের সমস্ত সৈন্য একত্র করেছিলেন, সেই দিন একবার দেওয়ানী
পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/১৩১
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পদ্মিনী
১২১