বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পদ্মিনী
১২৩

হাজার আগুনের শিখা যেন মহা আনন্দে সেই সুড়ঙ্গের মুখে ছুটে এল! প্রচণ্ড আলোয় রাত্রির অন্ধকার টলমল করে উঠল! বারো-হাজার, রাজপুতনীর সঙ্গে রাণী পদ্মিনী অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপ দিলেন; চিতোরের সমস্ত ঘরের সমস্ত সোনামুখ, —মিষ্টি কথা, আর মধুর হাসি নিয়ে, এক নিমেষে, চিতার আগুনে, ছাই হয়ে গেল;— সমস্ত রাজপুতের বুকের ভিতর থেকে চীৎকার উঠল,—“জয় মহাসতীর জয়—!” আল্লাউদ্দীন নিজের শিবিরে শুয়ে সে চীৎকার শুনতে পেলেন; তিনি তৎক্ষণাৎ সমস্ত সৈন্য প্রস্তুত রাখতে হুকুম পাঠালেন।

 পরদিন সূর্য্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে চিতোরের পাহাড় বেয়ে বর্ষাকালের স্রোতের মত রাজপুতসেনা হর-হর-শব্দে দিক্‌দিগন্ত কাঁপিয়ে ভয়ঙ্কর তেজে পাঠান-সৈন্যের উপর এসে পড়ল। আল্লাউদ্দীনের তাতার-সৈন্য দেওয়ানী ফৌজের কুঠারের মুখে নিমেষের মধ্যে ছিন্নভিন্ন, ছারখার হয়ে পলায়ন কল্লে। আল্লাউদ্দীন নতুন নতুন সৈন্য এনে বারম্বার রাজপুতদের বাধা দিতে লাগলেন,—স্রোতের মুখে বালির বাঁধের মত তাঁর সমস্ত চেষ্টা প্রতিবার বিফল হল। আল্লাউদ্দীন নিজে একজন সামান্য বীরপুরুষ ছিলেন না; এর চেয়ে