বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
রাজকাহিনী

ঢের কম সৈন্য নিয়ে তিনি মেবারের চেয়ে অনেক বড় বড় হিন্দু রাজত্ব অনায়াসে জয় করেছেন; কিন্তু আজ যুদ্ধে রাজপুতের বীরত্ব দেখে তাঁকে ভয় পেতে হল। বারো বার তিনি সৈন্য সাজিয়ে রাজপুতদের বাধা দিলেন, বারো বার তাঁকে হটে আসতে হল। আল্লাউদ্দীন বেশ বুঝলেন, আজ যুদ্ধের সহজে শেষ নেই। এক দিকে দিল্লীর বাদশাহী তক্ত আর-একদিকে চিতোরের রাজসিংহাসন;—কোনটা থাকে, কোনটা যায়!

 তখন বেলা তৃতীয় প্রহর, আল্লাউদ্দীন নিজের সমস্ত ফৌজ একেবারে এক সময়ে সেই বারো হাজার রাজপুতের দিকে চালাতে হুকুম দিলেন। নিমেষের মধ্যে পাঠানবাদশার লক্ষ লক্ষ হাতীঘোড়া, সেপাইশাস্ত্রী, প্রলয়ঝড়ের মত ধূলার ধূলায় চারিদিক অন্ধকার ক’রে, দীন্—দীন্-শব্দে রাজপুতের দিকে ছুটে আসতে লাগল। তার পর, হঠাৎ এক সময়, সমুদ্রের তরঙ্গে নদীর জল যেমন, তেমনি সেই অগণিত পাঠান-সৈন্যের মাঝে কয়েক হাজার রাজপুত কোন্‌খানে লুপ্ত হল, কিছু আর দেখা গেল না। কেবল সূর্য্যাস্তের কিছু পূর্ব্বে সেই যুদ্ধ-রত অসংখ্য সৈন্যের মাথার উপরে সূর্য্যমূর্ত্তিলেখা চিতোরের রাজপতাকা একবারমাত্র সন্ধ্যার আলোয়