বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজকাহিনী

উদয়-অস্ত দুই সন্ধ্যা আরতি, সকল ভারই তাঁর উপর;—ভৃত্য নাই, অনুচর নাই, একটি শিষ্যও নাই! বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ একাই প্রতিদিন ত্রিশ সের ওরজনে পিতলের প্রদীপে দু‍ই সন্ধ্যা সূর্য্যদেবের আরতি করতেন; প্রতিদিনই সেই শীর্ণ হাতে রাক্ষস-রাজার রাজমুকুটের মত মন্দিরের প্রকাণ্ড ঘণ্টা বাজাতেন; আর মনে মনে ভাবতেন, যদি একটি সঙ্গী পাই তবে এই বৃদ্ধ বয়সে তার হাতে সমস্ত ভার দিয়ে নিশ্চিন্ত হই।

 সূর্য্যদেব ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করলেন। একদিন পৌষ মাসের প্রথমে ঘন কুয়াশায় চারিদিক অন্ধকার ছিল, সূর্য্যদেব অস্ত গেছেন, বৃদ্ধ পুরোহিত সন্ধ্যার আরতি শেষ করে ভীমের বুকপাটাখানার মত প্রকাণ্ড মন্দিরের লোহার কপাট বহুকষ্টে বন্ধ করছেন, এমন সময় ম্লানমুখে একটি ব্রাহ্মণকন্যা তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হল;—পরনে ছিন্ন বাস, কিন্তু অপূর্ব্ব সুন্দরী! বোধ হল যেন শীতের ভয়ে একটি সন্ধ্যাতারা সূর্য্যমন্দিরে আশ্রয় চায়! ব্রাহ্মণ দেখলেন কন্যাটি সুলক্ষণা, অথচ তার বিধবার বেশ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন,— “কে তুমি? কি চাও?” তখন সেই ব্রাহ্মণবালিকা