বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
রাজকাহিনী

করে, কেউ বা দৈয়ের ভার কাঁধে নিয়ে, একজন তামাসা দেখতে, অন্য জন বা পয়সা করতে নগেন্দ্রনগরের রাজপুত-রাজার বাড়ির দিকে মেলা দেখতে ছুটল। বাপ্পা প্রকাণ্ড বনে একলা রইলেন; তাঁর প্রাণের বন্ধু দুটি,—ভাই ভীল বালিয় আর দেব, দিদির হাত ধরে এই আনন্দের দিনে বাপ্পাকে কতবার ডাকলে,—“ভাই, তুই কি রাজবাড়ি যাবি?” বাপ্পা শুধু ঘাড় নাড়লেন,—“না যাবনা।” হয় ত তাঁর মনে হয়েছিল,—আমার ভাই নেই, বোন নেই, মা নেই, আমি কার হাত ধরে কাকে নিয়ে আজ কিসের আনন্দের মেলা দেখতে যাব? কিন্তু যখন বালি আর দেব, ভীলনী-দিদির সঙ্গে সঙ্গে হাসতে হাসতে চলে গেল; যখন সকালের রোদ মেঘের আড়ালে ঢেকে গেল; বাপ্পার একটিমাত্র গাই চরতে চরতে যখন মাঠের পর মাঠ পার হয়ে বনের আড়ালে লুকিয়ে পড়ল; যখন বনে আর সাড়া-শব্দ নেই, কেবল মাঝে মাঝে ঝিঁঝির ঝিনি-ঝিনি, পাতার ঝুরু-ঝুরু; সেই সময় বাপ্পার বড়ই একা-একা ঠেকতে লাগল। তিনি উদাস প্রাণে ভীলনী-দিদির মুখে-শোনা ভীল-রাজত্বের একটি পাহাড়ী গান ছোট একটি বাঁশের বাঁশীতে বাজাতে লাগলেন। সে গানের কথা বোঝা গেল না, কেবল