বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
রাজকাহিনী

তুমি? তুমি কি নগেন্দ্রনগরের শোলাঙ্কি-রাজকুমারী? তুমি কি কখনো ঝুলন-পূর্ণিমায় এক রাখাল বালককে বিয়ে করেছিলে?” ভিখারিণী অনেকক্ষণ একদৃষ্টে বাপ্পার মুখের দিকে চেয়ে রইল, তারপর একটুখানি হেসে বল্লে,—“মহারাজ, অর্দ্ধেক রাত্রে ভিখারিণীকে ডেকে এ কি তামাসা!” বাপ্পা বল্লেন,—“তবে কি তুমি রাজকুমারী নও?” ভিখারিণী নিশ্বাস ফেলে বল্লে—,“আমি একদিন রাজকুমারী ছিলাম বটে, আজ ভিখারিণী! মহারাজ, আমি মুসলমান নবাব সেলিমের কন্যা। একদিন, পোনেরো বৎসর বয়সে, তুমি আমাদের রাজ্য কেড়ে নিয়েছিলে, সে দিন আমি এই রাজপ্রাসাদের এই ছাদের উপর থেকে তোমায় দেখেছিলেম;—কি সুন্দর মুখ, কি প্রকাণ্ড শরীর! আর আজ তোমায় কি দেখছি! সে শরীর নেই, সে হাসি নেই! এমন দশা তোমার কে কল্লে? কোন রাজপুত—কুমারীর আশায় তুমি পাগলের মত দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছ?” বাপ্পা বল্লেন,—“সে কথা থাক্, তুমি আবার সেই গান গাও।” ভিখারিণী গাইতে লাগল— “আজি কি আনন্দ! ঝুলত ঝুলনে শ্যামর চন্দ!” বাপ্পা সমস্ত দুঃখ ভুলে সেই ভিখারিণীর মুখের দিকে চেয়ে