বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
রাজকাহিনী

থেকে, চিতোরে ফিরে এলেন। পদ্মের সৌরভ যেমন সমস্ত সরোবর প্রফুল্ল কোরে ক্রমে দিগ্‌‌দিগন্তে ছড়িয়ে যায়, তেমনি কমলালয়া লক্ষ্মীর সমান সুন্দরী সেই পদ্মমুখী রাজপুতরাণী পদ্মিনীর রূপের মহিমা, গুণের গরিমা দিনে দিনে সমস্ত ভারতবর্ষ আমোদ কল্লে! কি দীন দুঃখীর সামান্য কুটীর, কি রাজাধিরাজের রাজপ্রাসাদ,—এমন সুন্দরী, এ হেন গুণবতী কোথাও নেই!

 এই আশ্চর্য্য সুন্দরী পদ্মিনীকে নিয়ে ভীমসিংহ যখন চিতোরের একধারে, সাদাপাথরে বাঁধানো সরোবরের মধ্যস্থলে, রাজ-অন্তঃপুরে, শীতল কোঠায় সুখে দিন কাটাচ্ছিলেন, সেই সময়ে একদিন, দিল্লীতে, তখনকার পাঠান-বাদশা আল্লাউদ্দীন, খাসমহলের ছাদে গজদন্তের খাটিয়ায় বসে বসন্তের হাওয়া খাচ্ছিলেন। আকাশে চাঁদ উঠেছিল, পাশে সরবতের পেয়ালা হাতে পিয়ারী বেগম বসেছিলেন, পায়ের কাছে বেগমের এক নতুন বাঁদী সারঙ্গীর সুরে গজল গাইছিল। বাদশা হঠাৎ বলে উঠলেন,—“কি ছাই, আরবী গজল! হিন্দুস্থানের গান গাও!” তখন পিয়ারী বেগমের নতুন বাঁদী নতুন করে সারঙ্গী বেঁধে নতুন সুরে গাইতে