বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
রাজকাহিনী

কই? ধন্য রাণা ভীমসিং! জয় রাজরাণী, চিতোরের রাজউদ্যানে প্রফুল্ল পদ্মিনী!” আল্লাউদ্দীনের কানে অনেকক্ষণ ধরে বাজতে লাগল— “চিতোরে রাজউদ্যানে প্রফুল্ল পদ্মিনী!” তিনি আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে বলে উঠলেন,—“বাঁদী, তুই কি স্বচক্ষে পদ্মিনীকে দেখেছিস্? সে কি সত্যই সুন্দরী?” বাঁদী উত্তর কল্লে,—“জাঁহাপনা! দিল্লী আসবার আগে আমি চিতোরে নাচগান করে জীবন কাটাতেম; পদ্মিনীর বিয়ের রাত্রে আমি রাণীর মহলে নেচে এসেচি।”

 আল্লাউদ্দীন গালে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলেন; কিছুক্ষণ পরে বলে উঠলেন,— “পিয়ারী, আমার ইচ্ছে করে পদ্মিনীকে এই খাসমহলে নিয়ে আসি।” পিয়ারী বেগম বলে উঠলেন,— “শাহেনশা, আমার সাধ যায় আকাশের চাঁদটাকে সোনার কৌটায় পুরে রাখি।” কথাটা আল্লাউদ্দীনের ভালো লাগল না। দিল্লীর বাদশা, যাঁর মুঠোর ভিতর অর্দ্ধেক ভারতবর্ষ, তিনি কি একজন রাজপুত-রাণীকে ধরে আনতে পারেন না? শাহেনশা মুখ গম্ভীর করে উঠে গেলেন,—মনে মনে বলে গেলেন,—“থাকো পিয়ারী, যদি পদ্মিনীকে আনতে পারি তবে তোমাকে তার বাঁদী হয়ে থাকতে হবে!”