বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পদ্মিনী
৮১

 তার পর দিন, লক্ষ লক্ষ সৈন্য নিয়ে আল্লাউদ্দীন চিতোরের মুখে চলে গেলেন। পাঠান-সৈন্য যে দিক দিয়ে গেল, সে দিকে, পথের দুই ধারে, ধানের ক্ষেত, লোকের বসতি ছারখার করে যেতে লাগল।

 তখন বসন্তকাল। সমস্ত চিতোর জুড়ে দিকে দিকে আনন্দের রোল উঠেছে,—“হোরি হ্যায়! হোরি হ্যায়!” ঘরে ঘরে আবিরের ছড়াছড়ি, হাসির হো-হো, আর বাসন্তী রঙের বাহার! সেই ফাগুনে, ভরা আনন্দ আর হাসিখেলার মাঝখানে, একদিন চিতোরে খবর পৌঁছল, আল্লাউদ্দীন আসছেন;—ঝড়ের মুখে প্রদীপের মত চিতোরের সমস্ত আনন্দ এক—নিমিষে নিবে গেল! তখন কোথায় রইল রাণার রাজসভায় ধ্রুপদ খেয়ালে হোরি—বর্ণনা, কোথা রইল রাণীদের অন্দরে ‘ফাগুনমে হোরি মচাও’ বলে মিষ্টি সুরে মধুর গান, কোথায় লালে-লাল-রাস্তায় দলে দলে হাসি তামাসা আর কোথায় বা গোলাপজীর মন্দির থেকে রাগ বসন্তে নওবতের সুর! আবিরে গোলাপে লালে-লাল চিতোরের ঘরে ঘরে অস্ত্রশস্ত্রের ঝন্‌ঝনার সঙ্গে আর এক ভয়ঙ্কর খেলার আয়োজন চলতে লাগল;—সে খেলা লোকের প্রাণ নিয়ে খেলা,—তাতে, বুকের রক্ত, ছুরির ঘা,