বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজকাহিনী - অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৪).pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পদ্মিনী
৮৩

ছাদে উঠলেন। আকাশ অন্ধকার;—চন্দ্র নাই, তারা নাই। পদ্মিনী দেখলেন, সেই অন্ধকার আকাশের নীচে আর একখানা কালো অন্ধকার কেল্লার সম্মুখ থেকে মরুভূমির ওপার পর্যন্ত জুড়ে রয়েছে। পদ্মিনী বলে উঠলেন,—“রাণা, এখানে সমুদ্র ছিল আমি তো জানি না; মাগো, সাদা সাদা ঢেউ উঠ্‌ছে দেখ!” ভীমসিং হেসে বল্লেন,—“পদ্মিনী, এ যে-সে সমুদ্র নয়;—ও পাঠান-বাদশার চতুরঙ্গ সৈন্যবল। ঐ দেখ, তরঙ্গের পর তরঙ্গের মত শিবিরশ্রেণী, জলের কল্লোলের মত, ঐ শোনো, সৈন্যের কোলাহল! আজ আমার মনে হচ্ছে, সেই নীল সমুদ্র যার বুকের মাঝ থেকে আমি একটি সোনার পদ্মফুলের মত তোমায় ছিঁড়ে এনেছি, সেই সমুদ্র যেন আজ এই চতুরঙ্গিনী মূর্ত্তি ধরে তোমাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে এসেছে। কেমন করে যে এই বিপদসাগর পার হব ভাবছি।” ভীমসিং আরও কি বলতে যাচ্ছিলেন হঠাৎ একটা কাল-পেঁচা চীৎকার করে মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেল; তার প্রকাণ্ড দুখানা কালো ডানার ঠাণ্ডা বাতাস, সে অন্ধকার ছাদে, রাণা-রাণীর মুখের উপর, কার যেন দুখানা ঠাণ্ডা হাতের মত, বুলিয়ে গেল। পদ্মিনী