পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৯১
বিজয়মাণিক্য ও দৈত্যনারায়ণ

কালের মধ্যে অবলীলাক্রমে রাজ্য হাতের মুঠোর মধ্যে আনিয়া প্রবল প্রতাপে রাজদণ্ড ধারণ করিলেন। এদিকে তাঁহার রাণী মাধবের সহিত রাজার ষড়যন্ত্রের ও সাঙ্কেতিক হীরার অঙ্গুরীর কথা গোপনে জানিয়া প্রতিহিংসায় জ্বলিতে লাগিলেন। কিন্তু মাধব আর উদয়পুরের ত্রিসীমানা মাড়ান না। একদিন রাণী দেখেন মহারাজ সেই সাঙ্কেতিক হীরার অঙ্গুরী বিছানার উপরে ফেলিয়া অতি প্রত্যুষে শিকারে বাহির হইয়া গিয়াছেন। এতদিনে সুযোগ মিলিল। রাণী চতুরতা করিয়া হীরার অঙ্গুরীয় লোক মারফৎ পাঠাইয়া দিলেন। মাধব উহা দেখা মাত্রই বুঝিলেন মহারাজ ডাকিয়াছেন, তাই নিঃসন্দেহে উদয়পুরে রাজপুরীতে প্রবেশ করেন। কিন্তু উহা ছিল মৃত্যুর ডাক, প্রাসাদের পথে আসিতেই ঘাতকের হস্তে প্রাণ হারাইলেন!

 মৃগয়া হইতে ফিরিয়া আসার পর তিন দিন কাটিয়া গেল, মহারাজ সহসা এই কাহিনী শুনিতে পাইলেন। তাঁহার ক্রোধের সীমা রহিল না। যখন ভাল করিয়া জানিতে পারিলেন ইহা মহাদেবীর কার্য্য তখন রাণীকে নির্জ্জন অরণ্যে নির্ব্বাসনে পাঠাইলেন। পাটরাণীর পদ শূন্য হইল, নূতন পরিণয় দ্বারা তিনি শূন্যস্থান পূরণ করিলেন। শেষে পাত্রমিত্রের অনুরোধে সেই রাণীকে ক্ষমা করিয়াছিলেন।