পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৯৪
পাঠান বিদ্রোহ

যুদ্ধ যাত্রা করেন। তাঁহার সঙ্গে এক সহস্ৰ পাঠান সৈন্য গিয়া মিলিত হইবে এইরূপ কথা রহিল। বিজয়মাণিক্য চলিয়া যাওয়ার পর পাঠানদের সহিত উজিরের ঝগড়া বাঁধিয়া গেল। রাজকোষ হইতে অর্থের ব্যবস্থা হইলেও বেতন বাকী পড়িয়াছিল, সেইজন্য পাঠানেরা ক্ষেপিয়া উঠিয়া উজিরকে মারিয়া ফেলে। উজিরের পুত্র প্রতাপনারায়ণ ভয়ে পলাইয়া গেলেন। উজিরের মৃত্যুর পর পাঠানেরা বিদ্রোহের জন্য চেষ্টা পাইতে লাগিল, পূর্ব্ববঙ্গের এ অঞ্চলে যত পাঠান ছিল তাহাদের একত্র হইবার চেষ্টা চলিল। তাহাদের মধ্যে পরামর্শ হইল রাজধানী লুট করিতে হইবে এবং চট্টগ্রামের পথে বিজয়মাণিক্যকে অবরোধ করিয়া তাঁহার প্রাণ সংহার করিতে হইবে। কিন্তু ইহা অচিরেই মহারাজের কানে উঠিল, তখন বিজয়মাণিক্য সংহার মূর্ত্তি ধরিয়া স্বয়ং রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইলেন এবং পাঠান সেনাকে ধরাশায়ী করিলেন। যাহারা প্রাণ লইয়া পলাইতে পারিল তাহারা গৌড়ে যাইয়া নবাবের দরবারে লাঞ্ছনার কথা নিবেদন করিল।

 বিজয়মাণিক্য পাঠান দলনের দ্বারা যেমন স্বরাজ্য নিষ্কণ্টক করিলেন তেমনি অমিত বিক্রমে নবাব সৈন্য পরাজিত করিয়া চট্টগ্রামের পূর্ণ আধিপত্য লাভ করিলেন। চট্টগ্রাম হইতে বিতাড়িত হওয়ায় পূর্ব্ববঙ্গ অঞ্চলে নবাবের অধিকার খর্ব্ব হইয়া পড়িল। নবাব সুলেমান বীর পুরুষ ছিলেন, উড়িষ্যা বিজয় দ্বারা তাঁহার যশ চতুর্দ্দিকে ছড়াইয়া পড়িয়াছিল।