পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১১১
উদয়মাণিক্য ও জয়মাণিক্য

ভোজন কক্ষে ঢুকিয়া যখন আহারে বসিবেন এমন সময় দূরে তাঁহার এক প্রিয় সখাকে দেখিতে পাইলেন। সখা অমরকে অঙ্গুলি দ্বারা “সাবধান” এইরূপ সঙ্কেত করিয়া একটি পানের বোঁটা পান হইতে খসাইয়া ফেলিলেন। অমর বুঝিতে পারিলেন বোঁটার ন্যায় তাঁহার গলা দেহ হইতে পৃথক করিবার জন্য আয়োজন হইয়াছে। অমর শিহরিয়া উঠিলেন, কিন্তু বিপদে সাহস হারাইলেন না। রণার নিকট কহিয়া উঠিলেন—“আমার সহসা বাহ্যের বেগ হইয়াছে, পায়খানায় এক্ষুণি যাওয়া দরকার।” ব্যস্ত সমস্ত হইয়া রণা অমরকে পায়খানা দেখাইবার জন্য লোক সঙ্গে দিলেন। অমর পায়খানার পথে দেওয়াল টপ্‌কাইয়া কখন যে প্রস্থান করিলেন, সেবক জানিতে পারিল না। ভোজনশালায় রণা পার্শ্বচর সহ অমরের প্রতীক্ষায় রহিলেন।

 ওদিকে অমর ঘোড়াশালে অলক্ষিতে ঢুকিয়া ঘোড়ার পিঠে চড়িয়া নিজ গড়ে পৌঁছিলেন। নিজের সৈন্যের নিকট ষড়যন্ত্রের কথা ব্যক্ত করিয়া পিতৃসিংহাসনের তিনিই যে ন্যায্য উত্তরাধিকারী তাহা মুক্তকণ্ঠে ঘোযণা করিলেন। সৈন্যগণ তাঁহার নিকট শপথ গ্রহণ করিল, এতদিনে অমরের ছদ্মবেশ খসিয়া পড়িল। সিংহাসন অধিকারের জন্য অমর বন্ধুগণ সহ উঠিয়া পড়িয়া লাগিলেন। রণার ভাই ছিলেন সমরজিৎ নারায়ণ। সমরজিৎ রণার দক্ষিণ হস্ত ছিলেন। যখন রণা অমরের পলায়ন কাহিনী ও যুদ্ধ সজ্জার বিষয় জানিলেন তখন নিজ দুর্গে তিনিও প্রস্তুত হইতে লাগিলেন। ভ্রাতা সমরজিৎকে তিনি আসন্ন