পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১১৮
 

অমরমাণিক্যের সেনাপতি
ইষা খাঁ

করিতে লাগিলেন। এদিকে ইস্‌লাম খাঁর সৈন্য ঐপথে আসামাত্রই ইষা খাঁ বার হাজার অশ্বারোহী ও অল্প পদাতি লইয়া শত্রুর গতিরোধ করিলেন, বাকী সৈন্য গড়ে রহিয়া গেল! ইষা খাঁর আক্রমণের ক্ষিপ্রতায় শত্রুসৈন্য ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়িল, তাহারা পুনঃ জমাট বাঁধিবার পূর্ব্বেই ইষা খাঁর প্রবল চাপে পলায়ন করিতে বাধ্য হইল। বিপদের মেঘ কাটিয়া গেল, ইষা খাঁ লব্ধকীর্ত্তি লইয়া সগৌরবে রাজধানীতে ফিরিলেন। মহারাজ অত্যন্ত প্রীত হইয়া ইষা খাঁর উপর রাজসম্মান বর্ষণ করিলেন।

 অমরমাণিক্যের ভাগ্যে আবার হরিষে বিষাদ ঘটিল। ভুলুয়া জয়ের পর যুবরাজ রাজদুর্লভ সেখানে ত্রিপুর সেনার ছাউনিতে বাস করিতেছিলেন। সে স্থান সমুদ্রের সন্নিকট, লোনা জলে তাঁহার অসুখ করিল—ক্রমে ব্যাধি দুরারোগ্য হইয়া যুবরাজের জীবনান্ত ঘটাইল। পুত্রশোকে অমরমাণিক্য অত্যন্ত কাতর হইয়া পড়িলেন। চিত্তবিনোদনের জন্য মহারাজ শিকারে বাহির হন। কৈলাগড় (কসবা) পথে অমরমাণিক্য যাত্রা করেন, তৎপরে জলপথে সেনাপতিসহ দাউদপুর ঘাটে আসিয়া উপনীত হন। সেখানকার জমিদার যেখানে মহারাজের অভ্যর্থনা করেন তাহা ‘মিলন ঘাট’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। তিতাস পার হইয়া মহারাজ সরাইল গমন করেন। কিছুদিন পূর্ব্বে ইষা খাঁ সেখানে গড়খাই প্রস্তুত করিয়াছিলেন। তখন সরাইলে গভীর অরণ্য। সুতরাং শিকারের সুবিধা হইয়াছিল।