পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১২১
অমরমাণিক্য ও মঘরাজ

নদীতে ভিড়ান হইল, ইহাদের উৎকৃষ্ট আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কথা বলাই বাহুল্য। সুতরাং মহারাজের প্রতিপক্ষরূপে য়ুরোপীয় একটি জাতিও দাঁড়াইল! এ সংবাদ অমরমাণিক্য যথা সময়ে জানিতে পারিয়া তদুপযোগী আয়োজন করিলেন। যুবরাজের মৃত্যুতে রাজধরই ভাবী রাজারূপে গণ্য হইতেন, তাই রাজধরকে সেনাপতিপদে বরণ করিতে বাধ্য হইলেন, তাঁহার অধীনে অপর দুই ভাই অমর ও যুঝা স্ব স্ব সৈন্য মিলাইয়া যুদ্ধ যাত্রা করিলেন। তিন ভাইয়ের সৈন্য একত্রিত হইলেও ইঁহাদের মনের মধ্যে পূর্ব্ববৎ পার্থক্য রহিয়া গেল। প্রত্যেকেই স্ব স্ব প্রধান ও নিজ নিজ কৃতিত্ব দেখাইতে তৎপর। এমন অবস্থায় যুদ্ধের ফল পূর্ব্বেই অবধারিত, এক্ষেত্রেও সেই বিষময় ফল ঘটিয়াছিল।

 ত্রিপুর সৈন্য চট্টগ্রাম পৌঁছিয়া স্থির করিল আরাকানপতিকে আক্রমণ করা দরকার, সেই মতে এক নিভৃত প্রদেশে কর্ণফুলি নদীর উপরে ভাসমান সেতু সৃষ্টি করিয়া নদী পার হইয়া ত্রিপুর সৈন্য মঘ রাজ্য প্লাবিত করিতে লাগিল। দেখিতে দেখিতে রাম্বূ, দেয়াঙ্গ প্রভৃতি স্থান জয় হইয়া গেল। মঘদের কৌশল রাজধর বুঝিয়া উঠিতে পারেন নাই। ত্রিপুর সৈন্য যখন বিজয় গর্ব্বে দিশাহারা হইয়াছিল তখন দেখা গেল মঘ ও পর্ত্তুগীজেরা তাহাদিগকে পেছন হইতে ঘিরিয়া ফেলিয়াছে, তাহারা বেড়াজালে আটক হইয়া পড়িয়াছে। নদী পার হইয়া তাহারা যে হঠকারিতার পরিচয় দিয়াছে তাহা তখন বুঝিতে কাহারও বাকী রহিল না। মঘেরা রসদের সব রাস্তা বন্ধ